Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর ঢালাও প্রশস্তি করে ফের স্বমহিমায় শুভেন্দু

দলের যুব সংগঠনের একদা সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে তৈরি হওয়া ফাটল মেরামত করতে এগিয়ে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা অব্যাহত। এ বার বনগাঁ লোকসভা উপ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মমতা ঠাকুরের সমর্থনে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ঢালাও প্রশস্তি করে শুভেন্দুও দূরত্ব কমানোর ইঙ্গিত দিলেন।

স্বরূপনগরে তৃণমূল সাংসদ। ছবি: নির্মল বসু।

স্বরূপনগরে তৃণমূল সাংসদ। ছবি: নির্মল বসু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বনগাঁ ও স্বরূপনগর শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৬
Share: Save:

দলের যুব সংগঠনের একদা সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে তৈরি হওয়া ফাটল মেরামত করতে এগিয়ে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা অব্যাহত। এ বার বনগাঁ লোকসভা উপ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মমতা ঠাকুরের সমর্থনে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ঢালাও প্রশস্তি করে শুভেন্দুও দূরত্ব কমানোর ইঙ্গিত দিলেন।

শুভেন্দু এ দিন তিনটি সভা করেন। স্বরূপনগরের চারঘাট, গোবরডাঙা এবং গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাজারে তিনটি সভাতেই মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একটি বড় অংশ মনে করছে, মমতা দিন কয়েক আগে কালীঘাটে বাড়িতে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে শুভেন্দু এবং অধিকারী পরিবারকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। নিজের গাড়িতে চাপিয়েই শুভেন্দুকে নবান্নে নিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি মুকুল রায়ের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী চাইছিলেন, শুভেন্দুর সঙ্গে দূরত্ব কমাতে। সেই লক্ষে যে তিনি অনেকটাই সফল, তা শুভেন্দুর এ দিনের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার।

চাঁদপাড়ায় শুভেন্দু বলেন, “জাতীয় জনক মহাত্মা গাঁধীর সঙ্গে কারও তুলনা করছি না। তিনি দেশকে স্বাধীন করার জন্য অনশন করেছিলেন। স্বাধীনতার পরে মমতা ছাড়া দেশের কোনও নেতানেত্রী মানুষের জন্য অনশন করেননি। কিন্তু তাঁকে এবং তাঁর দলকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে।” স্বরূপনগরে তিনি বলেন, “ভোটের আগে রাজ্যে সভা করতে এসে রাজনাথ বলেছিলেন, বাংলার উন্নয়নে মমতাকে সব রকম সাহায্য করবেন। কিন্তু পরে দেখা গেল, ফল উল্টো। উন্নয়ন দূরঅস্ৎ, রাজ্য থেকে রেলের সমস্ত প্রকল্প বন্ধ করে দিলেন।” তাঁর কথায়, “মমতা লড়াই করে নেত্রীর মর্যাদা পেয়েছেন। সিঙ্গুরে যখন গরিব কৃষকদের জমি সিপিএম লুঠ করছে, নন্দীগ্রামে গুলি চলছে, তখন মমতাই আমাদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তখন কংগ্রেস, বিজেপি বা সিপিএমের টিকিও খুঁজে পাওয়া যায়নি। দেখুন দার্জিলিংয়ে আজ আর আন্দোলন হয় না। লাশের মিছিল দেখা যায় না জঙ্গলমহলে। বোমাগুলির শব্দ ভুলে গিয়েছে মানুষ।”

শুভেন্দু বলেন, “এই নির্বাচনে বাংলার মানুষের সঙ্গে বিজেপির সিবিআই জুজুর বিরুদ্ধে লড়াই। বামফ্রন্ট সংখ্যালঘুদের মিথ্যা বুঝিয়ে কেবল নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। মমতা কিন্তু বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্য দিয়ে সংখ্যালঘুদের মর্যাদা দিয়েছেন।” বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “সঞ্চয়িতার মালিককে গ্রেফতার করতে সিপিএমের দু’বছর লেগেছিল। বুদ্ধবাবুর আমলে ২০০১ সালে সারদা তৈরি হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে। সারদা তৈরির মূল কারিগর ছিলেন সিপিএম নেতা আনন্দ বিশ্বাস। বুদ্ধবাবু কিন্তু তাঁকে গ্রেফতার করেননি। আর মমতা অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুদীপ্তকে গ্রেফতার করেছেন। পাঁচ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি ১২ লক্ষ মানুষ কবে টাকা ফেরত পাবেন?”

চাঁদপাড়ায় সাংবাদিকদের শুভেন্দু বলেন, “ভোটে হারানো যাবে না জেনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, “দিল্লির একটা শক্তি চাইছে তৃণমূল এবং ভারতের আঞ্চলিক দলগুলিকে মুছে দিতে। ভারতকে আমেরিকার কাছে বিক্রি করার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE