ছবি: সংগৃহীত
উৎসবের মরসুমে অভিযান চালিয়ে বর্ধমান শহরের খোসবাগানের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে বিধি না মানার অভিযোগ পেয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। নতুন করে ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট’ শংসাপত্র না পাওয়া পর্যন্ত রামকৃষ্ণ রোডের ওই নার্সিংহোম বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরের নাকের ডগায় বসে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে খোলা রয়েছে ওই নার্সিংহোম। রোগীও ভর্তি রয়েছেন। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ সরাসরি এ নিয়ে কোনও জবাব দিতে রাজি না হলেও রিসেপশনে বসা এক কর্মী মেনে নিয়েছেন সে কথা। শহরের নবাবহাটের কাছে একটি নার্সিংহোমও বন্ধ করে দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “খোসবাগানের ওই নার্সিংহোম বন্ধ করা হয়েছে। এখন ওই নার্সিংহোম খোলা থাকলে তা অবৈধ।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই ওই নার্সিংহোম অস্থি বিভাগ রয়েছে বলে এক রোগীকে ভর্তি করেছিল। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওই নার্সিংহোমে ভর্তি দেখিয়ে অন্য নার্সিংহোমে রোগীর অস্ত্রোপচার করানো হয় বলে অভিযোগ। ওই অবস্থায় ‘ঝুঁকি’ নিয়ে ফের রামকৃষ্ণ রোডের নার্সিংহোমে ফিরিয়ে আনা হয় রোগীকে। পরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের বদলে মোটা অঙ্কের বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানান ওই রোগীর পরিজনেরা। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আচমকা অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা মেলে। আরও দেখা যায়, ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট’ শংসাপত্র ছাড়াই নার্সিংহোমটি চলছে। ৫০ শয্যার নার্সিংহোমে পর্যাপ্ত চিকিৎসক বা নার্সও নেই। এর পরেই সিএমওএইচ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্য শোনেন। পরে নার্সিংহোমটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে রোগী ভর্তি করছেন কেন? নার্সিংহোমের অন্যতম কর্তা, প্যাথলজিস্ট আবির গুহ বলেন, “এ নিয়ে কথা বলব না। সিএমওএইচ অফিসে কথা বলব। তার পরে জানাব।’’ রিসেপশনের কর্মীর মন্তব্য নিয়েও কিছু বলতে চাননি তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, পরপর দু’দিন নবাবহাটের ওই নার্সিংহোমে আচমকা অভিযান চালান সিএমওএইচ (ডেপুটি ৩) জয়ব্রত দেব ও এসিএমওএইচ (বর্ধমান সদর) আত্রেয়ী চক্রবর্তী। তাঁরা গিয়ে দেখেন, কোনও পরিকাঠামো নেই। দু’জন রোগী ভর্তি রয়েছে, তাঁদের দেখারও কেউ নেই। চিকিৎসক, নার্স তো দূরের কথা প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীও নেই। দালালের মাধ্যমে রোগী ভর্তি করার বিষয়টিও চোখে পড়েছে ওই কর্তাদের। প্রণববাবু বলেন, “ওই নার্সিংহোম বন্ধ করা হয়েছে। পাকাপাকি ভাবে সিই-শংসাপত্র বাতিল করা যায় কিনা দেখা হচ্ছে।’’
শহরের আরও দু’টি নার্সিংহোমে হানা দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। তার মধ্যে একটিকে এক মাস বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, আর একটিকে নার্সিংহোমকে সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy