কালনায় ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত প্লাস্টিক। নিজস্ব চিত্র
শহরকে প্লাস্টিক-মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ। পুরসভা বছর দুয়েক আগে শহরে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। তার পরেও বেআইনি প্লাস্টিকের ব্যাগের রমরমা চলছিল কালনায়। মঙ্গলবার আচমকা অভিযানে নেমে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করলেন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সবুজ শহর গড়তে সাফাইয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অথচ, পুরকর্মীরা শহর ঘুরে দেখছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন নর্দমার মুখে জমে রয়েছে অজস্র প্লাস্টিকের ব্যাগ। ফলে, বৃষ্টি হলেই নিকাশির সমস্যা তৈরি হচ্ছে। নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও এত বেআইনি প্লাস্টিকের ব্যাগ দেখা যাচ্ছে কেন? পুরসভা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, বৈধ প্লাস্টিকের ব্যাগের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অবৈধ ব্যাগের চাহিদাই বেশি। মাছ-আনাজের বাজার থেকে মুদির দোকান, সর্বত্রই এই ব্যাগের লেনদেন চলছে। ফলে, শহর জুড়ে দূষণ ছড়াচ্ছে।
১০৮ শিবমন্দির-সহ নানা পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে এলাকায়। তার টানে প্রতিদিন কালনায় আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। এই সব নির্দশনকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে শহর প্লাস্টিক মুক্ত করার নির্দেশ রয়েছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের তরফে।
এ দিন সকালে পুরপ্রধান দেবপ্রসাদবাবু পূর্ত বিভাগের কাউন্সিলর বিনয় দত্ত ও জঞ্জাল বিভাগের কাউন্সিলর ঝন্টু বিশ্বাসকে নিয়ে অভিযানে বেরোন। প্রথমে আমলা পুকুর এলাকার বাসিন্দা নীতিশ বিশ্বাসের বাড়ি থেকে দু’টি ঘরে ঠাসা প্রচুর অবৈধ প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পুরসভার কর্মীরা ছ’ট্রলি প্লাস্টিক বাজেয়াপ্ত করেন। নীতিশবাবু দাবি করেন, বহু বৈধ ব্যাগও পুরসভা বাজেয়াপ্ত করেছে। এ ব্যাপারে পুরপ্রধান তাঁকে বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে লিখিত আবেদন জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
এর পরেই বড়মিত্রপাড়া এলাকার গৌতম দাসের বাড়িতে গিয়েও প্রচুর অবৈধ প্লাস্টিক মজুত রয়েছে দেখা যায়, জানান পুরসভার কর্তারা। সেগুলি বাজেয়াপ্ত করেন পুরকর্মীরা। সেখান থেকে ছোটমিত্রপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী দীপক দাসের বাড়িতে যান দেবপ্রসাদবাবুরা। তাঁরা জানান, সেখানও প্রচুর প্লাস্টিকের ব্যাগ দেখা যায়। বেশ কিছু ব্যাগের প্যাকেট বৈধ বলে লেখা থাকলেও আসলে সেগুলি অবৈধ। উদ্ধার হয়েছে এক কুইন্টালেরও বেশি অবৈধ ব্যাগ। গৌতমবাবু ও দীপকবাবু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁদের পরিবারের লোকজন অবৈধ প্লাস্টিক রাখার কথা মানতে চাননি।
দেবপ্রসাদবাবু জানান, শহরে অবৈধ প্লাস্টিক ব্যাগ বিক্রির ব্যাপারে আট জন ব্যবসায়ীর নাম পেয়েছে পুরসভা। অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে প্লাস্টিক ব্যবহারে রাশ টানা যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy