Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হবে, দাবি বিরোধীদের

লোকসভা ভোটে বিধানসভাভিত্তিক কোন দলের কী অবস্থা? প্রচারে কারা কোন বিষয়তে তুলে ধরছে? আজ, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫৮
Share: Save:

উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। এ বারও এখানে ওই ভোটকেই ‘পাখির চোখ’ করেছে তৃণমূল। সেই ভোট কতটা শাসকদলের পক্ষ যাবে, তা সময়ই বলবে। কিন্তু বিজেপির দাবি, সংখ্যালঘু ভোট দেখিয়ে এ বারে তৃণমূল নির্বাচন বৈতরণী পার হতে পারবে না। কারণ, এ বার এখানে লড়াই চতুর্মুখী। ফলে, ওই ভোট ভাগ হবে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ২৪ হাজারের কাছাকাছি ভোটে। সেই ব্যবধান বেড়ে যায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। তৃণমূল জিতে যায় সাড়ে ২৭ হাজার ৫০০ ভোটের ব্যবধানে। এই বিধানসভা কেন্দ্রটি উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের ন’টি এবং শ্যামপুর ১ ব্লকের চারটি— মোট ১৩টি পঞ্চায়েত নিয়ে গঠিত। গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন সব ক’টি পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্বের একটি বড় অংশের বক্তব্য, ২০২১ সালের বিধানসভা এবং গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগ তাঁদের ঝুলিতে এসেছে। লোকসভা নির্বাচনেও সেটা হবে বলে তাঁদের দাবি।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

বিজেপি নেতারাও স্বীকার করছেন, এই বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটাররা গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক। কিন্তু তাঁদের দাবি, ২০২১-এর মতো উজাড় করা সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূল এ বার পাবে না। বিজেপি নেতা রমেশ সাধুখাঁ বলেন, "মোদীজির উন্নয়নমূলক কাজকে সমর্থন করে বহু সংখ্যালঘু বিজেপিকে ভোট দেবেন। যাঁরা আমাদের ভোট দেবেন না, তাঁরা অন্য কাউকে ভোট দেবেন। এতে পরোক্ষে আমাদেরই লাভ।’’

অন্য কাউকে বলতে বিজেপি যাঁদের বোঝাতে চেয়েছে, তাঁদের মধ্যে আছেন আইএসএফ এবং বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী। আইএসএফ উলুবেড়িয়া লোকসভায় প্রার্থী দিলেও সাংঠনিক দুর্বলতার জন্য তারা এখানে কতটা কী করতে পারবে তা নিয়ে এলাকার রাজনৈতিক মহলে সংশয় আছে। যদিও দলের প্রার্থী মফিকুল ইসলামের দাবি, "আমরা শক্ত লড়াই দেব।" বাকি থাকে বাম-কংগ্রেস জোট। এই বিধানসভা কেন্দ্র ২০১১ সালে পালাবদলের আগে পর্যন্ত ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি। বিধানসভা নির্বাচনে বরাবর এই কেন্দ্রটি বরাদ্দ হয় ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য। কিন্তু তাদের এ বারে উলুবেড়িয়ায় জোটের হয়ে প্রচারে এখনও দেখা যাচ্ছে না। ফলে, বাম-কংগ্রেস জোট কার্যত পরিণত হয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস জোটে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মীরা বসে আছেন। সিপিএম নেতা সাবিরুদ্দিন মোল্লা মানছেন, ‘‘একটা বড় শরিক যদি বসে যায় তা হলে সমস্যা তো হয়ই। আমাদের রাজ্য নেতৃত্ব ফরওয়ার্ড ব্লককে মাঠে নামাতে চেষ্টা করছেন।’’ স্থানীয় সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক নেতাদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, সংখ্যালঘুদের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের ভাল প্রভাব আছে। তাই জোটের স্বার্থে তাদের মাঠে নামানোর চেষ্টা হচ্ছে।

তৃণমূল নেতাদের দাবি, বিরোধীদের এই ছন্নছাড়া অবস্থায় রাজনীতি সচেতন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সিংহভাগ মানুষ এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না যাতে বিজেপির সুবিধা হয়। তা ছাড়া, এলাকায় উন্নয়নও হয়েছে ব্যাপক। সেটাও তাঁদের পক্ষে কাজ করবে। এ নিয়ে প্রচারও চলছে। এই কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ ও পরামর্শে আমরা পালাবদলের পরে উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে এলাকার রূপরেখা পাল্টে দিয়েছি। মানুষ উন্নয়নমূলক কাজের নিরিখে আমাদের আশীর্বাদ করবেন।" বিজেপির অভিযোগ, উন্নয়নমূলক কাজের নামে দুর্নীতি হয়েছে। তারাও এ নিয়ে প্রচারে নেমেছে। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলক বলেন, "চ্যালেঞ্জ করছি, দুর্নীতি হয়ে থাকলে বিজেপি প্রমাণ দিক।"

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একাধিক বুথে ভোট লুটের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। উলুবেড়িয়ার একটি পঞ্চায়েতে বেআইনি ভাবে সিপিএমের এক প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের অভিযোগে তৎকালীন বিডিও এবং উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসককে আদালতের নির্দেশে শাস্তির মুখে পড়তে হয়। সেই ঘটনার নজির টেনে সিপিএম নেতা সাবিরুদ্দিন বলেন, "আমাদের আশঙ্কা, লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূল ভোট লুট করবে। কমিশনের প্রতিনিধিরা নীরব দর্শকের ভূমিকা নেবেন।" পুলক বলেন, "উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিতে এমনিতেই মানুষ আমাদের পাশে থাকবেন। তৃণমূল ভোট লুটে বিশ্বাসী নয়। এটা সিপিএমের সংস্কৃতি। তাই তারা প্রতিটি নির্বাচনের আগে এ কথা বলে বাজার গরম করে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Uluberia Minority votes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE