Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুচলেকার পরেও বিয়ে, অভিযোগ

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া ২ ব্লকের নলহাটি দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ওই কিশোরী দাঁইহাট গার্লস স্কুলের ছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গত ১৬ এপ্রিল তার বিয়ে রুখতে গিয়েছিলেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১৬
Share: Save:

বছর ষোলোর নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়ে আটকেছিল প্রশাসন।

আঠারো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকাও দিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। তার কিছুদিন পরেই প্রশাসন জানতে পারে, বিয়ে হয়ে গিয়েছে ওই কিশোরীর। এরপরেই কাটোয়ার নলহাটির ওই নাবালিকার বাবার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া ২ ব্লকের নলহাটি দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা ওই কিশোরী দাঁইহাট গার্লস স্কুলের ছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গত ১৬ এপ্রিল তার বিয়ে রুখতে গিয়েছিলেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা। সঙ্গে ছিলেন ব্লক সমাজকল্যাণ আধিকারিকও। তাঁরা অভিভাবকদের নাবালিকা বিয়ের কুফল বোঝান। মেয়ের শরীর ও মনে কম বয়সে বিয়ের কী প্রভাব পড়তে পারে তাও জানান। এর পরেই সময়ের আগে বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেকা দেন নাবালিকার বাবা। কিন্তু গত ২৬ নভেম্বর স্থানীয় এক যুবক ব্লক কার্যালয়ে এসে ওই নাবালিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা জানায়।

প্রশাসনের তরফে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, খাসপুরে বিয়ে হয়েছে ওই কিশোরীর। এখন শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে সে। এর পরেই কাটোয়া ১-এর বিডিও গত ১৪ ডিসেম্বর মেয়েটির বাবা, পেশায় ভাগচাষি ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

মঙ্গলবার নলহাটিতে মেয়েটির বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বাবা, মা ও বোন রয়েছে। ওই কিশোরীর এক কাকা দাবি করেন, ‘‘আমরা প্রশাসনের কথামতো ওর ঠিক হয়ে যাওয়া বিয়ে ভেঙে দিয়েছিলাম। মেয়ে স্কুলেও যাচ্ছিল ক’দিন। কিন্তু তার পরেই ওকে বারণ করা হলেও পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে।’’ বিয়ে দেওয়ার কথা মানেননি কিশোরীর বাবাও। ওই কিশোরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সেও কিছু বলতে চায়নি।

স্থানীয় বিডিও মহম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘‘আঠারো বছরের আগে বিয়ে দেওয়া হয়েছে জেনে অভিযোগ করেছি। ওই এলাকায় নাবালিকা বিয়ের বিরুদ্ধে প্রচার বাড়ানো হবে।’’ মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে জানা যায়, কন্যাশ্রী প্রকল্পে ২০১৫ সাল থেকে তিন বার দু’হাজার টাকা ও ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে হাজার টাকা পেয়েছে ওই কিশোরী। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বিয়ে আটকানোর পরে আর খোঁজখবর করে না প্রশাসন। ফলে অনেকেই লুকিয়ে অন্যত্র আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে মেয়েদের বিয়ে দেন। অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা না বাড়লে এ প্রবণতা রোখা মুশকিল বলেও তাঁদের দাবি। মহকুমাশাসক সৌমেন পাল বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের নজর রয়েছে। মেয়েটি যাতে ফের স্কুলে ফিরে আসে সে বিষয়টি দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Kanyashree Prakalpa Kanyashree
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE