সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পড়ছেন জেলার বহু মানুষ। বর্ধমান স্টেশনেও মাস্ক পরে টিকিট পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র
বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, মানুষের সংস্পর্শ এড়ালেই হয়তো আটকানো যাবে করোনাভাইরাসকে। কিন্তু সচেতনতা, সতর্কবার্তা দিতে গিয়ে ক্রমাগত জনসংযোগ করে চলেছেন বিভিন্ন দলের নেতারা।
তৃণমূল, বিজেপি দু’দলের কর্মসূচি যে এখনই পুরোপুরি বন্ধ হবে না তা বোঝা যাচ্ছে নেতাদের কথাবার্তায়। সিপিএমের দাবি, বুধবার মন্তেশ্বরে দলের একটি সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের জেরে সভায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সিপিএম।
সোমবারই বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার বিভিন্ন মণ্ডলের কর্তা, কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন বিজেপির জেলা ও রাজ্যের কার্যকর্তারা। পুরভোটের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রাথমিক রণকৌশলও তৈরি হয় সেখানে। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার পরেও রাজ্যে কী ভাবে কর্মসূচি চলছে? দলের সাংগঠনিক জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর দাবি, “আমরা এই সময় যে কোনও বড় জমায়েত বন্ধ করেছি। তবে সাংগঠনিক সভা চলবে। সেই সভায় রাজনৈতিক কথাবার্তার সঙ্গে মানুষকে কী ভাবে করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন করতে হবে, সেটাও আমাদের আলোচ্য হবে।’’
এ দিনই বর্ধমান শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোড়াপাড়া বস্তিতে সাড়ে তিনশো মাস্ক বিলি করে বিজেপি। সঙ্গে কী ভাবে সচেতন থাকতে হবে, জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে সেই কথাও জানানো হয়।
তৃণমূলের তরফেও জেলার প্রতিটি বিধানসভায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নানা রকম কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি সভাতেই জমায়েতও হচ্ছে। আজ, মঙ্গলবার সাঁইবাড়ির গণহত্যার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকালে ও বিকালে দু’টি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। সকালের অনুষ্ঠানে জেলার মন্ত্রী তথা সভাপতি স্বপন দেবনাথ ও বিকেলের অনুষ্ঠানে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের থাকার কথা। এই উপলক্ষ্যে প্রতিটি ব্লকে ও পুর এলাকায় প্রতিবাদ-অনুষ্ঠান করার কথা বলেছেন জেলা সভাপতি। আগামী বৃহস্পতিবার জনসংযোগ যাত্রার কর্মসূচি রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী যেখানে রাজ্যে মহামারী আইন জারি করেছেন, সেখানে এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়া কি ঠিক? সরাসরি জবাব না দিয়ে স্বপনবাবু বলেন, “সচেতন করতে আমরা নানা ধরনের কর্মসূচি করছি। অল্প সংখ্যক মানুষকে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে জনসচেতনতার বার্তাও দেওয়ার কথা।’’ বর্ধমানের তৃণমূল নেতা খোকন দাসের দাবি, আগামী পনেরো দিনে দলের নানা কর্মসূচি ছিল। সোমবার থেকে সব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। জেলার মহিলা সভানেত্রী তথা বর্ধমান পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর শিখা দত্ত সেনগুপ্ত বলেন, “এক-দু’জন করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত লিফলেট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অমল হালদারের দাবি, “আমাদের একটি সভা পুলিশ নিষেধ করেছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। অযথা জেদাজেদি করা ঠিক নয়।’’ তবে করোনাভাইরাসের জন্য সিপিএম কোনও কর্মসূচি বাতিল করার সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি। দলের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, “পরীক্ষার জন্য ২৭ তারিখ পর্যন্ত মাইক বাজিয়ে কোনও সভা করা যাবে না। ফলে এমনিতেই সব কর্মসূচিই হচ্ছে ঘরের ভিতর। এখনই তা বন্ধ করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
অর্থাৎ সাধারণ মানুষ ভিড় এড়িয়ে চলতে চাইলেও আপাতত মানুষকে ছাড়তে পারছে না নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy