Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Coronavirus

কালোবাজারি রুখতে দোকানের নাম প্রকাশ

ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজার থেকে চড়া দামে খাদ্যসামগ্রী কিনতে হচ্ছে।

বেনাচিতির আনাজ বাজার সরানো হল দেশবন্ধুনগর মাঠে। নিজস্ব চিত্র

বেনাচিতির আনাজ বাজার সরানো হল দেশবন্ধুনগর মাঠে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২০ ০০:১৭
Share: Save:

কালোবাজারি রুখতে বেশি দাম নেওয়া দোকানগুলির তালিকা প্রকাশ করার কথা জানাল আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। এ দিকে, প্রশাসন জানায়, দুর্গাপুরের বাকি বাজারগুলিও ফাঁকা মাঠে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, জনসাধারণের একাংশের নিয়ম না মানার প্রবণতা ও কালোবাজারি, এই দু’টিই এখন মূল চিন্তার বিষয়।

ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজার থেকে চড়া দামে খাদ্যসামগ্রী কিনতে হচ্ছে। শুক্রবার বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁইকে সঙ্গে নিয়ে বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল দুর্গাপুর বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ীদের কাছে সহযোগিতার আর্জি জানান। অন্যথায় কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। পুলিশও গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে।

তবে এ সব পদক্ষেপেও পরিস্থিতি না বদলানোয় বেশি দাম নেওয়া দোকানদারদের তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘ক্রেতারা জানুন, ওই ব্যবসায়ীরা তাঁদের ঠকাচ্ছেন। ফলে, ব্যবসায়ীরা লজ্জা পাবেন। ক্রেতারাও ওই দোকানগুলি থেকে মুখ ফেরাবেন। এর পরেও পরিস্থিতি না বদলালে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুলিশ জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ২৭টি এমন দোকানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বেনাচিতি, চণ্ডীদাস বাজার, সিটি সেন্টার, মুচিপাড়া, পলাশডিহা-সহ শহরের নানা জায়গার কোন দোকানে কোন-কোন সামগ্রীর দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে, কে, কোন সামগ্রী মজুত করে রাখছেন, কে ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন, তালিকায় উল্লেখ করা থাকছে।

নাম প্রকাশের এই পন্থা সম্পর্কে দুর্গাপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সভাপতি কবি দত্ত বলেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক জোট হওয়াটা খুব জরুরি। এই পরিস্থিতির সুযোগ যাতে কেউ না নিতে পারেন, সে বিষয়ে প্রশাসন যা পদক্ষেপ করবে, আমরা তার সঙ্গে থাকব।’’

পুলিশ-প্রশাসনের আক্ষেপ, বারবার প্রচার সত্ত্বেও হাটে-বাজারে করোনা-সতর্কতা বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই অবস্থায় শনিবার থেকে বেনাচিতির আনাজ বাজার ও মাছ বাজার যথাক্রমে দেশবন্ধু নগর মাঠে ও দিশারি ক্লাবের মাঠে, কালীগঞ্জের হাট লাগোয়া ফুটবল ময়দানে সরানো হয়েছে। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘শনিবার কাউন্সিলর ও বাজার কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে প্রশাসন মুচিপাড়া ও সগড়ভাঙার ঘোষ মার্কেট পরিদর্শন করে। সিদ্ধান্ত হয়, রবিবার থেকে মুচিপাড়া বাজার বসবে স্থানীয় মিতালি সঙ্ঘের মাঠে। ঘোষ মার্কেট সরে যাবে কে ব্লক গ্রাউন্ডে।’’

তবে শুক্রবার আংশিক খোলা ছিল। কয়েকজন খুচরো বিক্রেতা বসেছিলেন। কিন্তু সতর্কতা-নিয়ম লঙ্ঘিত হওয়ায় শুক্রবার বাজার বন্ধ করে বাজার কমিটি। ওই দিন অবশ্য পাইকারি বাজার বন্ধই ছিল। ক্রেতাদের দাবি, এর ফলে, শহরের বিভিন্ন বাজারে আনাজের জোগানে সমস্যা দেখা দেয়। শনিবার থেকে ফের তাই খোলে বাজার।

মহকুমাশাসক জানান, সেন মার্কেটে ভিড় এড়াতে খুচরো বিক্রেতাদের সরানো হয়েছে এলাকার একটি নার্সিংহোমের পাশের ফাঁকা জায়গায়। বাজারের ভিতরে শুধু পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেনাকাটা করবেন। বাজার এলাকা থেকে পার্কিং সরিয়ে মোটরবাইক, স্কুটি, সাইকেলের জন্য বাঁকুড়া মোড়ের কাছে জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া রোড ওভারব্রিজের তলায় ও লাগোয়া এলাকায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীদের সমবায় অফিসের সামনের ফাঁকা জায়গায় গ্যামন ব্রিজের দিক থেকে আসা ক্রেতাদের গাড়ি ও মোটরবাইক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE