বাড়ি কবে ফিরবেন, সেই অপেক্ষাতেই। নিজস্ব চিত্র
জমানো টাকা প্রায় শেষ। ‘লকডাউন’-পরিস্থিতিতে চলছে না যানবাহন, ট্রেন। বন্ধ আন্তঃরাজ্য সীমানাও। এই পরিস্থিতিতে জেলায় আটকে পড়া ভিন্-রাজ্যের বহু পরিবারের এখন একটাই প্রশ্ন, ‘‘বাড়ি ফিরব কী ভাবে? চোখের সামনে যেন সব শেষ হয়ে যাচ্ছে।’’
খাঁ খাঁ জিটি রোডের ধার ঘেঁষে আসানসোলের কাঁকরশোল এলাকা। সেখানেই কয়েকজন খুদে আবর্জনার স্তূপে খেলা করছে। ওদের পিছু নিতেই দেখা গেল, কাপড়ের তৈরি পরপর কয়েকটি তাঁবু। খুদেরা ততক্ষণে ঢুকে গিয়েছে সেগুলিতে। এক-একটি তাঁবুতে চার-পাঁচ জনের পরিবার নিয়ে রয়েছেন অনেকে।
তেমনই একটা তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলেন অশীতিপর রাজেন্দ্র সিংহ। তিনি জানান, উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর ও চিত্রসেন এলাকা থেকে তাঁরা প্রায় ছ’টি পরিবার প্রতি বছরের মতো এ বারেও গত বছর ডিসেম্বরে আসানসোলে এসেছেন। নানা এলাকায় ঘুরে ঘুরে তেল বিক্রি করেন তাঁরা। সাধারণত, মার্চে ব্যবসা গুটিয়ে বাড়ি ফেরেন।
এ বারেও সে পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ‘লকডাউন’ ঘোষিত হওয়ায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে গিয়েছে, জানান রাজেন্দ্রবাবু, সোনু সিংহ, পার্বতীদেবী প্রমুখ। তাঁদের আক্ষেপ, ‘‘গত কয়েকমাসের রোজগার প্রায় শেষ। এখানে বিনামূল্যের রেশনও তো পাব না। জানি না, বাচ্চাদের নিয়ে কী ভাবে সংসার চলবে।’’
পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভিন্-রাজ্য থেকে আসা এমন বহু পরিবারই জেলায় আটকে পড়েছেন। অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে জেলায় আটকে পড়া মোট ৮৪৮ জন অন্য রাজ্যের বাসিন্দা ও পরিযায়ী শ্রমিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের জন্য খাদ্য ও অস্থায়ী আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন জানায়, যাঁরা সমস্যায় পড়েছেন, তাঁরা লাগোয়া এলাকার কাউন্সিলরের কাছে গিয়ে সমস্যার কথা জানালে সরকারি ত্রাণ পাবেন। আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকারের নির্দেশে ও জেলা প্রশাসনের সুপারিশ মেনে এমন মানুষদের জন্য পুরসভা অস্থায়ী আশ্রয়স্থল বানাচ্ছে।’’
তবে কাঁকরশোলের ওই পরিবারগুলি জানায়, প্রশাসনের এ সব পদক্ষেপ সম্পর্কে তারা কিছুই জানত না। শনিবার দুপুর পর্যন্ত মেলেনি সরকারি সাহায্যও।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy