Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ধান বিক্রির টোকেন নিয়ে ‘দুর্নীতি’

চাষি ছাড়া অন্য কেউ যাতে সহায়ক মূল্যে ধান বেচতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে পঞ্চায়েত থেকে চাষিদের চিহ্নিত করে টোকেন দেওয়া হচ্ছে। সেটি দেখিয়ে সরকারি শিবিরে নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১১
Share: Save:

সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য টোকেনের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। এই পরিস্থিতিতে ফের টোকেন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতে। এ বার পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন পঞ্চায়েতের ৯ জন সদস্য। যদিও প্রধানের স্বামীর দাবি, গোষ্ঠী-কলহের জেরে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

চাষি ছাড়া অন্য কেউ যাতে সহায়ক মূল্যে ধান বেচতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে পঞ্চায়েত থেকে চাষিদের চিহ্নিত করে টোকেন দেওয়া হচ্ছে। সেটি দেখিয়ে সরকারি শিবিরে নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। যদিও চাষিদের দাবি, পঞ্চায়েতগুলি যে টোকেন দিচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় কম। সেই সঙ্গে টোকেন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

সম্প্রতি কালনার আটঘোরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোপেশ্বর মণ্ডল টোকেন-দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি অভিযোগ করেন, পঞ্চায়েতে টোকেন নিয়ে দুর্নীতির চেষ্টা করেন এক ঠিকাদার। প্রতিবাদ করায় তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ ওই ঠিকাদারকে গ্রেফতার করেছে।

কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনই শাসকদলের হাতে রয়েছে। সোমবার এই পঞ্চায়েতের সদস্য সোমা বর্মণ, আব্দুল রসিদ শেখ, বকুল মালিকের মতো ৯ জন পঞ্চায়েত সদস্য কালনা ১ ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে লিখিত অভিযোগ করেন, সহায়ক মূল্যে যে ধান কেনা হচ্ছে তার টোকেন পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামী সদস্যদের মাধ্যমে চাষিদের মধ্যে বিলি না করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিলি করছেন। ফলে, এলাকার প্রকৃত চাষিরা সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। আরও অভিযোগ, ২৮ নভেম্বর পঞ্চায়েতের একটি বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতিটি সংসদে সদস্যকে বাদ রেখে কোনও কাজ হবে না। কিন্তু প্রধান ও সরকারি কর্মীরা বিষয়টি অগ্রাহ্য করে তিনটি সংসদে একশো দিনের কাজের মাস্টাররোল বার করেছেন।

পঞ্চায়েত প্রধান রেশমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর স্বামী হাবিবুল্লাহ শেখ ফোন ধরেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘টোকেন নিয়ে দুর্নীতি হয়নি। ১৪টি সংসদের জন্য প্রতি সপ্তাহে ১৭টি টোকেন দেওয়া হচ্ছে। এক একটি টোকেনের মাধ্যমে ১০০ বস্তা করে ধান বিক্রি করা যাবে। এখনও পর্যন্ত প্রকৃত চাষিদের হাতেই টোকেন তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এলাকার শাসকদলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তার জেরেই এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অনেক পঞ্চায়েত সদস্য স্বেচ্ছায় অভিযোগপত্রে সই করেননি বলেও তাঁর দাবি।

কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের বেশিরভাগ সদস্য যেখানে টোকেন বিলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তার তদন্ত হবে। আপাতত ওই পঞ্চায়েতের টোকেন ব্লক থেকে দেওয়া হবে।’’ কালনার মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি বলেন, ‘‘অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Token Rice Panchayat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE