মাধবডিহিতে ঘটনার তদন্তে ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল নেতাকে খুন এবং দেহ লোপাটের চেষ্টায় ক’জন জড়িত ছিলেন, এর উত্তর খুঁজতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তদন্ত চালাল রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) চার সদস্যের একটি দল। শুক্রবার রায়নার মাধবডিহি গ্রামে তদন্ত চালায় দলটি। ধৃত কৃষ্ণ হাঁসদার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়।
তদন্তের নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র সায়েন্টিস্ট চিত্রাক্ষ সরকার বলেন, “কতজন মিলে খুন করেছে, এ মূহুর্তে বলা সম্ভব নয়। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে ‘কেস স্টাডি’ করে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তদন্তকারী সংস্থার হাতে রিপোর্ট তুলে দেব।’’ পুলিশের আশা, খুব তাড়াতাড়ি ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে পাওয়া যাবে।
এ দিন সকাল থেকেই নিহত অনিল মাঝির মোবাইলের খোঁজে পুকুর ও আশপাশের এলাকা তোলপাড় করে মাধবডিহি থানার পুলিশ। শেষে ধৃতের দেখানো ডোবার জল ছেঁচে মোবাইলটি মেলে। ওই ডোবা থেকেই নিহতের ‘লাইটার’ও পায় পুলিশ। তবে ধৃতের রক্ত লেগে থাকা জামা উদ্ধার করা যায়নি।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ চার সদস্যের দলটি মাধবডিহি থানায় পৌঁছয়। সেখানে পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রথমেই রক্ত লাগা দেওয়াল পরীক্ষা করেন। সেখান থেকে ঘাস, মাটি, দেওয়ালের চুন সংগ্রহ করা হয়। এর পরে ওই দেওয়াল থেকে আলপথ ধরে পুকুরে যে জায়গায় দেহ পোঁতা ছিল, সেখানকার মাটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তের নমুনা, জলীয় পদার্থ, চামড়ার টুকরো, মাটি, পুকুরের জল সংগ্রহ করা হয়। ততক্ষণে পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য ধৃতকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে।
পুলিশের দাবি, ধৃত একটি বাঁশ দিয়ে পিছন থেকে মেরেছিল অনিলবাবুকে এবং আর একটি বাঁশ দিয়ে মৃতদেহের চোখ-মুখ থেঁতলে দেয়। ফরেন্সিক দল ওই বাঁশ দুটিও পুলিশের কাছ থেকে নিয়েছে।
ফরেন্সিক দলের সঙ্গে ছিলেন এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খান, সিআই সঞ্জয় কুণ্ডু, ওসি (মাধবডিহি) সুব্রত বেড়া। এসডিপিও বলেন, “ফরেন্সিক দল বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। ধৃতের রক্তমাখা জামা-প্যান্ট উদ্ধারের জন্য তল্লাশি চলছে।’’
বুধবার বিকেলে মাধবডিহির আদিবাসীপাড়া-সহ বেশ কিছু বাড়িতে ভাঙচুর হয়। অভিযোগ, তার জেরে অনেকেই গ্রামছাড়া। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে এলাকায়। তৃণমূলের রায়না ২ ব্লক সভাপতি আনসার আলি খান বলেন, “একটা রোষ তৈরি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি ঠিক রয়েছে।’’ নিহতের স্ত্রী সাত জনের নামে অভিযোগ করেছিলেন। বাকি অভিযুক্তরা এখনও অধরা। তাঁদের খোঁজ চলছে, জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy