Advertisement
১১ মে ২০২৪
Daily Market

বাজার যেন জতুগৃহ, দাবি সব পক্ষেরই

যাতায়াতের পথ দখল করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানের সামগ্রী। কোথাও আবার রাস্তা দখল করেই পলিথিনের ছাউনির তলায় চলছে বেচাকেনা।

এ ধরনের ছাউনির নীচে বিকিকিনি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

এ ধরনের ছাউনির নীচে বিকিকিনি নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বার্নপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০১:৩৫
Share: Save:

যাতায়াতের পথ দখল করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানের সামগ্রী। কোথাও আবার রাস্তা দখল করেই পলিথিনের ছাউনির তলায় চলছে বেচাকেনা। ফলে, পশ্চিম বর্ধমানের বার্নপুর ইস্কোর ‘ডেলি মার্কেট’ জতুগৃহ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

বাজারে গিয়ে দেখা গেল, আবর্জনা ফেলার জন্য ‘ভ্যাট’ রয়েছে। কিন্তু তা ব্যবহার করা হচ্ছে না। যাবতীয় আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নর্দমায়। ফলে, বর্জ্য মিশ্রিত জল নর্দমা উপচে রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। এ সব বিষয়ে বলতে গেলেই বারবার কিছু ব্যবসায়ীদের বিরোধের মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ ইস্কো কর্তৃপক্ষের। তাঁদের দাবি, তাই বাজারের উন্নয়ন প্রক্রিয়াও বারবার বাধা পাচ্ছে। যদিও এ সব ‘মিথ্যা’ অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, বাজারের উন্নয়নের দাবি উঠলেই ব্যবসায়ীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ।

ইস্কো কর্তৃপক্ষ আর ব্যবসায়ীদের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দাঁড়িয়ে বাজারের উন্নয়নই থমকে গিয়েছে, এমনই দাবি ক্রেতাদের। তাঁরা জানান, প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনের রাস্তা দখল করে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। কেনাকাটার সময় হাঁটাচলা করতে সমস্যায় পড়তে হয়। এমনকি, বাজারের সর্বত্রই পলিথিনের ছাউনি টাঙিয়ে চলছে বেচাকেনা। দিনের ব্যস্ত সময়ে কখনও আগুন লাগলে আর রক্ষে নেই। ইস্কোকর্মী প্রণবেশ দাস বলেন, ‘‘শহরে এই একটিই বাজার। কিন্তু খুবই খারাপ অবস্থা। কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া।’’

ইস্কো সূত্রে জানা গিয়েছে সাত বছর আগে শীতকালে রাতের আগুনে ভস্মীভূত হয়েছিল এই বাজার। সে বার ঠিক হয়েছিল, বাজারে পলিথিনের ছাউনি রাখা হবে না। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের পরে বাজারের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

কোথা থেকে আগুন লাগল তা জানতে বুধ ও বৃহস্পতিবার তদন্তে নামেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও মানছেন, রাস্তা দখল থেকে পলিথিনের ছাউনিতে কার্যত জতুগৃহ হয়ে আছে বাজার। এমন চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দমকলের গাড়িও ঢুকতে সমস্যায় পড়বে বলে দাবি। তা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? ইস্কোর শহর বিভাগের জিএম ভাস্কর কুমার বলেন, ‘‘রাস্তাকে দখল মুক্ত ও পলিথিনের ছাউনি সরাতে গিয়ে অনেকবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। আমরা আবার এই বিষয়ে সচেষ্ট হব।’’

কী বলছেন ব্যবসায়ীরা? তাঁদের দাবি, লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান মালিকেরা নন, একদল বহিরাগত নিয়ম মানছেন না। ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম কর্তা কাজল পাল জানান, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের জন্য তাঁদের লাইসেন্স নবীকরণ হয়। এই পাঁচ বছরের মধ্যে বাজারটিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘২০১৯ সালে ফের লাইসেন্স নবীকরণের জন্য ভাড়া বাড়ানোর কথা বলা হয়। কিন্তু বাজারের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। এমনকি, কোনও আলোচনা ছাড়াই ওই বছর থেকে প্রত্যেক ব্যবসায়ীকে প্রায় ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।’’ তাঁর দাবি, বাজারকে দখলমুক্ত করা ও পলিথিনের ছাউনি সরানো হলে আপত্তি নেই। তবে বাজারের উন্নতি করতে হবে। ইস্কোর শহর বিভাগের দাবি, দখলদারি না হঠালে বাজারের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Daily Market IISCO Burnpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE