Advertisement
১০ মে ২০২৪

‘গাছ চুরি’, চিন্তা পরিবেশ নিয়ে

বন দফতর সূত্রে খবর, এমন বহু অভিযোগ উঠেছে সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের হদলা ও বাথানবাড়িতে।

কুলটিতে। ছবি: পাপন চৌধুরী

কুলটিতে। ছবি: পাপন চৌধুরী

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০১:১৮
Share: Save:

বিঘার পর বিঘা জঙ্গলের গাছ কেটে সাফ করে বেআইনি কারবার চালাচ্ছে কাঠের চোরা কারবারিরা। এর জেরে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের।

বন দফতর সূত্রে খবর, এমন বহু অভিযোগ উঠেছে সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া পঞ্চায়েতের হদলা ও বাথানবাড়িতে। দামোদর নদ লাগোয়া এই এলাকায় প্রায় এক দশক আগে সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির বনসৃজন প্রকল্পে প্রচুর শাল, সেগুন ও শিশু গাছ রোপণ করা হয়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত দশ বছরে বেড়ে ওঠা সেই সব গাছগুলিই কেটে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাথানবাড়ি, হদলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, জঙ্গলে পড়ে গাছের গুঁড়ি।

বাসিন্দাদের একাংশ জানান, গাছ-চোরেরা দিনের আলোয় গাছ কেটে পিকআপ ভ্যান অথবা ট্রাক্টরে তা চাপিয়ে দেন্দুয়া ও জোমারি লাগোয়া একাধিক কাঠগোলায় চেরাইয়ের জন্য নিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, প্রাথমিক ভাবে এই কারবারে বাধা দেওয়ায় হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি, জঙ্গলের কোন অংশের দখল কে নেবে, তা নিয়ে বিবাদেও জড়াচ্ছে চোরাই কারবারিরা। গত ৭ মে কালীপাথর এলাকায় এমনই দু’দল ‘গাছ চোরের’ মধ্যে ব্যাপক মারামারি ও বোমাবাজি হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কিন্তু কেন এই হাল, জানতে চাওয়া হলে দেন্দুয়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান সিমুলা মারান্ডি বলেন, ‘‘অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রশাসন ও বন দফতরকে পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানাব।’’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কুলটি কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে শহরের আনাচেকানাচে থাকা বড় বড় শাল, সেগুন, মেহগনি গাছগুলি কেটে পাচার করছে দুষ্কৃতীরা। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, প্রথমে এই গাছগুলির কেটে নেওয়া অংশ কুলটি ক্লাব রোড লাগোয়া এলাকায় জড়ো করা হচ্ছে। পরে সুযোগ মতো পাচার করা হচ্ছে।

লাগাতার গাছ-চুরির জেরে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, এমন অভিযোগ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন আসানসোলের পরিবেশকর্মী তথা কলেজ শিক্ষক অরূপ রায়। বন দফতর সূত্রে খবর, সালানপুর, কুলটি-সহ শিল্পাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় অবাধে গাছ কেটে পাচারের অভিযোগ মিলেছে। দফতরের রূপনারায়ণপুর রেঞ্জ অফিসার পঞ্চানন রক্ষিত বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অবাধে গাছ কাটা বন্ধ করতে ধারাবাহিক অভিযান শুরু করা হয়েছে। চোরেদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও করা হচ্ছে।’’

তবে দফতর সূত্রের খবর, কর্মী কম থাকায় শিল্পাঞ্চলের প্রায় ২০০ কিলোমিটার ব্যাস-এলাকায় লাগাতার নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। যদিও কোনও জায়গায় গাছ কাটার খবর পেলেই অভিযান চালানো হয়। বৃক্ষ নিধন রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির ব্লক ওপুরসভা কর্তৃপক্ষ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Logging Asansol Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE