Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলের চাবি কার কাছে থাকবে, প্রশ্ন প্রধান শিক্ষকদের

সমস্যাটা ঠিক কোন খানে? রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলে পাঁচটি বুথে আগামী ২৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণ করা হবে।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৯ ০২:২৩
Share: Save:

স্কুলের শিক্ষক, করণিক, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের পাশাপাশি, ভোটের ‘ডিউটি’-তে যেতে হবে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদেরও। বিভিন্ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা সম্প্রতি জেলাশাসকের (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠির সঙ্গে দেখা করে দাবি করেছেন, এই পরিস্থিতিতে স্কুলের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। তা ছাড়া তাঁদের প্রশ্ন, স্কুলের চাবি থাকবে কার কাছে।

ওই প্রধান শিক্ষকদের দাবি, তাঁদের নির্বাচনের কাজে যেতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তা হলে স্কুলের কাজ চলবে কী ভাবে, প্রশ্ন ওই শিক্ষকদের।

সমস্যাটা ঠিক কোন খানে? রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের স্কুলে পাঁচটি বুথে আগামী ২৯ এপ্রিল ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটের কাজে যেতে হবে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, ২৫ জন শিক্ষক, চার জন শিক্ষাকর্মীকে। তাপসবাবুর বক্তব্য, ‘‘প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুলের চাবি থাকে। নির্বাচনের সময় ‘কী হোল্ডার’-এর কাজ করেন প্রধান শিক্ষক বা তাঁর অনুপস্থিতিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক। তাঁকেই নির্বাচনের আগের দিন থেকে তিন দিন ক্লাসঘরগুলি খোলা, বন্ধ করা, জল বিদ্যুতের ব্যবস্থা করার তদারকি করতে হয়। স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ নথি সংরক্ষণেও নজর রাখতে হয়। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে তা হবে?’’ রানিগঞ্জের পুরনো এগারা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক গড়াই, বোগড়া বিবেকানন্দ মিশন বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক মন্ময় কাঞ্জিলালেরাও জানান, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ওই প্রধান শিক্ষকেরা জানান, প্রায় ২৫টি স্কুলের প্রতিনিধিরা গত ৩ এপ্রিল জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানান। তাঁরা জানতে চান, স্কুলের চাবি কাকে দিয়ে যাবেন। জেলাশাসক তাঁদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (এলএ) সমরজ্যোতি চক্রবর্তীর কাছে পাঠান বলে জানিয়েছেন মন্ময়বাবুরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘অতিরিক্ত জেলাশাসক সমস্যা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেও লাভ হয়নি।’’ অথচ, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে তিন দিন প্রধান শিক্ষকদের ভোট-প্রশিক্ষণের দিন নির্ধারিত হয়েছে। ২৮ এপ্রিল থেকে অন্যত্র ভোটের কাজে চলে যেতে হবে প্রধান শিক্ষকদের।

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে শিক্ষক সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতিও (এবিটিএ)। সংগঠনের জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষের দাবি, ‘‘এর আগে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের নির্বাচনী কাজে যুক্ত করা হয়নি। দ্রুত সমস্যাটির সমাধান হোক।’’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায়ের যদিও দাবি, ‘‘প্রধান শিক্ষকেরা এ বিষয়ে আমাদের সংগঠনকে কিছু জানাননি। জানালে নিশ্চয় আমরা সংগঠনগত ভাবে সমস্যা সমাধানের দাবি জানাব।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) অজয় পাল জানান, জেলায় ৩০৪টি জুনিয়র ও হাইস্কুল রয়েছে। বেশির ভাগ স্কুলেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্র করা হয়। তবে প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন।’’ যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক সমরজ্যোতিবাবুর দাবি, ‘‘যে যে স্কুলে এমন সমস্যা, সেগুলির তালিকা তৈরি করে জমা দিতে বলেছিলাম শিক্ষকদের। কিন্তু সেই তালিকা এখনও পাইনি। তা পেলে বিডিও-র মাধ্যমে ‘সেক্টর অফিসার’-কে চাবির দায়িত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE