রবিবার রাতে বাজি পোড়ানো আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম দিন ঠিক মতো সামলে প্রত্যাশা জাগালেও চূড়ান্ত দিনে মুখ থুবড়ে পড়ল নজরদারি।
শনিবার কালীপুজোর রাত মোটের উপর নির্বিঘ্নে কেটেছিল। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই বোতল থেকে বেরিয়ে জেলায় স্বমহিমায় দেখা দিল শব্দদানব। দীপাবলিতে সন্ধ্যা থেকে রাতভর শব্দবাজির দাপটে অতিষ্ঠ হলেন শিল্পাঞ্চলের নানা প্রান্তের লোকজন। আসানসোল ও দুর্গাপুর শহরের মধ্যে উপদ্রব খানিক কম থাকলেও আশপাশে যথেষ্ট চকলেট, দোদমা ফেটেছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
গত কয়েক বছর ধরে কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজির জেরে নাজেহল অবস্থা হয় শিল্পাঞ্চলের অনেকের, বিশেষত বয়স্ক মানুষজনের। এ বার শব্দবাজি বন্ধে দিন কয়েক আগে থেকে অভিযানে নামে প্রশাসন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। বেশ কিছু বাজি আটকও করা হয়। তবে বার্নপুর, কুলটির মতো বেশ কিছু জায়গায় ফুলঝুরি, চরকির আড়ালে শব্দবাজি বিক্রি নজরে এসেছিল। আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল তখন থেকেই।
কালীপুজোর রাতে অবশ্য বাজির সেই রকম দাপট দেখা যায়নি। স্বস্তি পেয়েছিলেন শহরবাসী। অভিযান কাজ দিয়েছে, দাবি করেছিলেন প্রশাসন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা। কিন্তু পরের রাতেই পাল্টে গেল চিত্রটা। পর্ষদের এক কর্তা অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন, আসল চ্যালেঞ্জ দীপাবলির রাতে। বাসিন্দারা জানান, রবিবার সন্ধে থেকেই দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার, বেনাচিতি বাজার, বিধাননগরের মতো নানা এলাকায় বাজি ফাটতে শুরু করে। পুলিশ-প্রশাসনকে সেই খবর দেন নাগরিকেরা। পর্ষদের তরফে জানানো হয়, যেখান থেকে খবর মিলেছে যত দ্রুত সম্ভব সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। দুর্গাপুরের বাসিন্দারাও জানান, রাতের দিকে বাজির উৎপাত অনেকটা কমে যায়।
তবে কুলটি, বরাকর, বার্নপুরে অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টায়নি বলে অভিযোগ। এই সব জায়গায় রাতভর দেদার বাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ করেন বাসিন্দারা। আসানসোল শহরে অবশ্য দৌরাত্ম্য সেই আকার নেয়নি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে শব্দাঙ্ক মাপার যন্ত্র বসানো ছিল বিভিন্ন জায়গায়। সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কোথায় বাজির দাপাট কেমন ছিল।’’
তবে শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অন্য বারের তুলনায় সার্বিক ভাবে এ বার পরিস্থিতি অনেকটা ভাল হয়েছে। দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর এ-জোনের বাসিন্দা অভিজিৎ ভট্টাচার্য, সিটি সেন্টারের বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘প্রতি বার অনেক রাত পর্যন্ত বাজির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের খুবই কষ্ট হয়। এই বছর সেই তুলনায় উপদ্রব কম।’’
পুলিশ জানায়, কালীপুজোর মতো দীপাবলির রাতেও শহরে টহল দেওয়া হয়েছে। যেখানে শব্দবাজির অভিযোগ মিলেছে, গিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, বাজির দাপট পুরোপুরি বন্ধ করতে আরও কড়া টহল ও অভিযানের প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy