Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পড়ে মৃত প্রৌঢ়, সেতুতে রেলিং না থাকায় ক্ষোভ

তার পরেই কালনার আটঘোরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের মাঝবাঁধি সেতুর হাল নিয়ে সরব হয়েছেন মৃতের পরিজন থেকে এলাকার বাসিন্দারা।

এই সেতু নিয়েই ক্ষোভ সিমলনে। নিজস্ব চিত্র

এই সেতু নিয়েই ক্ষোভ সিমলনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪১
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরেই জীর্ণ অবস্থা সেতুর। রেলিং বলে কিছু নেই। সংস্কারের দাবি উঠছিল অনেক দিন ধরেই। তারই মধ্যে বুধবার সকালে সেতু থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয় প্রৌঢ় এক চাষির। তার পরেই কালনার আটঘোরিয়া-সিমলন পঞ্চায়েতের মাঝবাঁধি সেতুর হাল নিয়ে সরব হয়েছেন মৃতের পরিজন থেকে এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আলুর জমিতে সেচের কাজে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সিমলন গ্রামের গৌর দাস (৫৫)। কাজ করে সকাল ১০টা নাগাদ ফিরছিলেন। আচমকা সেতুর উপর থেকে প্রায় ১২ ফুট নীচে পড়ে যান তিনি। শক্ত ঢালাইয়ে তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। প্রথমে তাঁকে আটঘোরিয়া-মধুপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সেখান থেকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সিমলন-হাটবেলে রোডের মাঝে রয়েছে ছোট সেতুটি। তার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে পাকা রাস্তা। কিন্তু সেতুর কোনও গার্ডওয়াল অবশিষ্ট নেই। পুরনো সেতুটি যে লোহা ও কংক্রিটের স্তম্ভগুলির উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেগুলিতে ফাটল ধরেছে। বেশ কয়েকটি ফাটল থেকে উঁকি দিচ্ছে বট, অশ্বত্থের চারা। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিনই অটো, টোটো, ট্রাক্টর, মোটরভ্যানের মতো নানা যানবাহন চলে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, যানবাহন গেলেই কাঁপতে থাকে সেতুটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে সেতুটি দিয়ে স্কুলের পড়ুয়া, চাষিরা যাতায়াত করেন। বিপজ্জনক সেতুর উপর দিয়ে এলাকার রোগীদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ধারেকাছে কোনও আলো নেই। তাই সূর্য ডোবার পরে রেলিং না থাকা সেতুটি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মাঝে-মধ্যেই সেতুর কাছে দুর্ঘটনায় পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। বছর দুয়েক আগে একটি মোটরভ্যানও পড়ে গিয়েছিল সেতু থেকে।
স্থানীয় চাষি সাহেবজান শেখ, বুদন মল্লিক, শম্ভু মালিকেরা জানান, গো়ড়ায় সেতুটির রেলিং ছিল। গাড়ির ধাক্কায় তা ভেঙে যায়। বর্ষার সময়ে সেতু দিয়ে যাতায়াত করা আরও মুশকিল হয়। এ দিন গৌরবাবুর মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী চিত্রা দাসের অভিযোগ, ‘‘সেতুটিতে যদি রেলিং থাকত, তাহলে ওঁকে এ ভাবে মরতে হত না। শরীরের ভারসাম্য হারালেও রেলিং ধরে বাঁচতে পারতেন।’’
‘মছলন্দপুর সিমলন সিদ্ধেশ্বরী কালচারাল অ্যান্ড এডুকেশনাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র দাবি, কয়েক বছর ধরেই তারা সেতুটির ব্যাপারে প্রশাসনকে সতর্ক করে আসছে। সংগঠনের সম্পাদক প্রভাত দাসের অভিযোগ, ‘‘অনেক বছর ধরেই সেতুটি সংস্কারের জন্য প্রশাসনের নানা স্তরে আর্জি জানিয়েছি। সেতুর নীচে খাল সংস্কার করে চাষিদের বর্ষায় সমস্যা মেটানোরও দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি।’’ কালনার মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালির আশ্বাস, সেতুটির পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident Kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE