প্রতীকী ছবি
মাস ছ’য়েক আগে বর্ধমান শহরে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছিলেন, সরকারি প্রকল্পের বাড়িতে বড় বড় করে ‘বাংলা আবাস যোজনা’ লিখতে হবে। বুধবার দুপুরে উপভোক্তাদের বাড়ির দেওয়ালে সেই পোস্টার সাঁটাতে গিয়েই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন পঞ্চায়েতের কর্মীরা।
বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের, তা হলে ছোট ছোট অক্ষরে ‘পিএমএওয়াই-জি’ (প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা) লেখা থাকবে কেন! যার উত্তর দিতে না পেরে মেমারি ১ ব্লকের আমাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলপকুর পাড়ে সরকারি প্রকল্পের বাড়ির গায়ে পোস্টার না লাগিয়েই ফিরে যান পঞ্চায়েতের ওই ‘ফেসিলিটেটর’-এরা।
পঞ্চায়েতের এক কর্তার কথায়, “পোস্টার লাগাতে না পেরে দু’জন কর্মী ঘণ্টাখানেক রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা প্রধান ও বিডিও-কে ঘটনাটি ফোনে জানান। সেখান থেকেও কোনও সদুত্তর না মেলায় তাঁরা পোস্টার না সাঁটিয়েই ফিরে আসেন।’’ বিডিও (মেমারি ১) বিপুল মণ্ডল জানান, তাঁরা বিষয়টি শুনেছেন। এলাকার মানুষকে সচেতন করা হবে।
ওই সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা পান উপভোক্তারা। কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প হলেও রাজ্য সরকার ৫০ শতাংশ টাকা দেয়। আমাদপুর পঞ্চায়েতে ওই প্রকল্পে ১৫২টি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেই সব বাড়ির দেওয়ালেই ‘বাংলা আবাস যোজনা’ প্রকল্প থেকে বাড়ি হচ্ছে বলে পোস্টার সাঁটানো হচ্ছিল। কর্মীদের দাবি, পোস্টারে ‘বাংলা আবাস যোজনা’ লেখার ঠিক নীচে ইংরেজিতে ‘পিএমএওয়াই-জি’ লেখা আছে। তার পরে উপভোক্তার নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-সহ বিভিন্ন তথ্য লেখার জায়গা রয়েছে। এ দিন সকাল থেকে আমাদপুরের বেশ কয়েকটি বাড়িতে পোস্টার সাঁটানোর পরে, গোলপুকুর পাড়ে বাধা পান ওই কর্মীরা। তাঁদের দাবি, রবিলাল মান্ডি, তপন বাস্কে, হারাধন মুর্মু-সহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে পোস্টার সাঁটাতে গিয়ে বাধা পেতে হয়। শুরু হয় বিক্ষোভ।
এক উপভোক্তার ভাই প্রশান্ত মান্ডির দাবি, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর। অথচ বড় করে লেখা হচ্ছে বাংলা আবাস যোজনা। আর ছোট করে ‘পিএমএওয়াই’ লেখা হচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে, কেন্দ্র সরকার এই ঘরের জন্য কোনও টাকা দেয়নি। সে জন্যই ওই পোস্টার পাল্টাতে বলেছি।’’ এলাকার বিজেপির মণ্ডল সভাপতি উজ্জ্বল দে বলেন, “স্থানীয় লোকজন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কথাটাও বড় করে লেখার দাবি জানিয়েছেন। সে জন্য আমরা ওই এলাকায় গিয়ে বিডিও এবং প্রধানকে ঘটনাস্থলে এসে নিয়ম জানানোর দাবি করেছিলাম। তাঁরা আসছেন না দেখে কর্মীদের আর আটকে রাখা হয়নি।’’
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের দাবি, “বেশির ভাগ উপভোক্তার ঘর তৈরি হয়নি। অথচ, পোস্টার সাঁটিয়ে নাম কিনতে চাইছে তৃণমূল!” মেমারির পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “রাজ্য সরকার ওই ঘরগুলি তৈরি করতে অর্ধেক অংশ দিচ্ছে বলেই তো বাংলা আবাস যোজনা। সে জন্যই বড় বড় করে লেখার নির্দেশ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী দিয়ে গিয়েছেন। বিজেপি বিষয়টি নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy