ধৃত দিলীপ ও নীলম। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির মধ্যেই রক্তাক্ত দেহ মিলেছিল যুবকের। ঘটনার দিন থেকে বেপাত্তা ছিলেন মৃতের দাদা-বৌদি। রবিবার ওই দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ধৃত দিলীপ পণ্ডিত জেরায় স্বীকার করেছেন, সম্পত্তির বেশির ভাগ অংশ ভাইকে দিতে চেয়েছিলেন মা। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তাঁদের অশান্তি হত। তার মধ্যেই ভাই জোর করে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে জানার পরে মাথায় আগুন চেপে যায় তাঁর। সুযোগ পেতেই ভাইকে খুন করেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, দেওরকে খুন করার সময় নীলম তাঁর স্বামীকে ‘সাহায্য’ করেছিলেন। সোমবার এই দু’জনকে বর্ধমান জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিন পুলিশ হেফাজত দেন।
গত শুক্রবার রাতে ধারাল ও ভারী বস্তুর আঘাতে মারা যান কাঞ্চননগর লিচুতলার বাসিন্দা বিজয় পণ্ডিত (২৪)। রাত ৯টা নাগাদ শহরের ভাতছালার বাড়ি থেকে আঞ্জিরবাগানের বাড়িতে আসেন মৃতের মা মালতীদেবী। বারবার ডাকাডাকির পরেও কেউ দরজা খুলছে না দেখে পড়শিদের ডাকেন তিনি। কয়েকজন যুবক আট ফুট উঁচু পাঁচিল টপকে ঢুকে দেখেন, কলতলায় রক্তাক্ত অবস্থায় বিজয় উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন। তবে সন্তানকে নিয়ে দিলীপ, নীলম কেউই বাড়িতে ছিলেন না। পুলিশ দেখে, বিজয়ের মাথায় বড় রকমের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরেও ১৫-১৬ জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এমনকী, ধারাল অস্ত্রের আঘাত থেকে বাঁচার জন্যে হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করায় তাঁর আঙুল কেটে গিয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শনিবার দুপুরে ছোট ছেলেকে সম্পত্তির লোভে বড় ছেলে খুন করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন মালতীদেবী। সেখানে তিনি জানান, ‘বড় বৌমা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ফোন করে জানিয়েছিল, বিজয় ভাতছালার বাড়ি ফিরে গিয়েছে। রাত ৯টাতেও বিজয় আসছে না দেখে কাঞ্চননগরের বাড়িতে গিয়ে দেখি, ছেলের দেহ পড়ে রয়েছে। বড় ছেলে, বৌমা কেউ বাড়িতে নেই।’’ এর পরেই অভিযুক্তদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় ফাঁদ পাতে পুলিশ। রবিবার সন্ধ্যায় জানা যায়, ওই দম্পত্তি বর্ধমান স্টেশনে রয়েছেন। পুলিশ গতিবিধির উপর নজর রেখে বড়বাজারের কাছ থেকে দু’জনকেই আটক করে। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদ করতেই দু’জনেই ভেঙে পড়ে ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় দিলীপ জানিয়েছেন, আড়াই বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর থেকে সম্পত্তির একটা বড় অংশ ছোট ছেলেকে দিতে চাইছিলেন মা। এ ছাড়াও ভাতছালার মাটির জিনিসপত্রের দোকানের বিক্রির বেশির ভাগ টাকাও ভাইকেই দিতেন মা। এ নিয়ে অশান্তি হত। এর মধ্যে স্ত্রী তাঁকে জানান, বিজয় তাঁর সঙ্গে গত দু’মাস ধরে জোর করে ‘সম্পর্ক’ তৈরি করেছে। আদালত থেকে পুলিশের ভ্যানে ওঠার সময় ধৃত বলেন, “মাথায় আগুন উঠে গিয়েছিল। সুযোগ পেতেই ভাইকে মেরেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy