প্রতীকী ছবি।
চালু হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যেই ফের চিকিৎসক-সঙ্কট দেখা দিতে চলেছে বর্ধমানের ট্রমা কেয়ার সেন্টার।
বছর খানেক আগে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি শাখা অনাময় হাসপাতালের ভিতর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের পরিকাঠামো তৈরি হয়। সেই সময় দু’জন করে অ্যানাস্থেটিস্ট, শল্য ও অস্থি বিশেষজ্ঞকে পাঠায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু স্নায়ু বিশেষজ্ঞ বা অন্য কর্মী না থাকায় ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু করার অনুমতি মেলেনি। বাধ্য হয়ে ওই ৬ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্যবহার করেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই ছ’জনকেই এক বছরের ‘বন্ডে’ ট্রমা কেয়ার সেন্টারের জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেই চুক্তি জুলাই-অগস্টে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নতুন চিকিৎসক যোগ না দিলে ট্রমা কেয়ার সেন্টার মুখ থুবড়ে পড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তথা অনাময় হাসপাতালের সুপার অমিতাভ সাহার দাবি, “ওই চিকিৎসকেরা নতুন করে আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইছেন না। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে কাজের গতি এসেছে। এই অবস্থায় চিকিৎসক-সঙ্কট হলে চালানো মুশকিল হয়ে পড়বে। রাজ্য স্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অনেক টালবাহানার পর গত ২৬ মার্চ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে বর্ধমানের উল্লাস মোড়ে ওই ট্রমা কেয়ার সেন্টারটি উদ্বোধন হয়। চালু হওয়ার পরে গত সাড়ে তিন মাসে পাঁচশোরও বেশি মানুষ দুর্ঘটনায় জখম হয়ে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ১৪৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আর অস্ত্রোপচার হয়েছে ৫০ জনের। তবে তার মধ্যেও চিকিৎসক এবং কর্মীর অপ্রতুলতা রয়েছে। হাসপাতালের দাহবি, ২৫ শয্যার এই ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ২০টি শয্যায় রোগী ভর্তি নেওয়া হয়েছে। হুগলির গুড়াপ থেকে পূর্ব বর্ধমানের গলসি পর্যন্ত দুর্ঘটনায় জখমদের চিকিৎসা এই হাসপাতালে হয়। ২৪ ঘন্টা রোগী ভর্তি করার জন্য অ্যানাস্থেটিস্ট, শল্য ও অস্থি বিভাগে তিন জন করে চিকিৎসকের অনুমোদন দিয়েছিল স্বাস্থ্যদফতর। সেখানে ৬ জন চিকিৎসক মিলেছিল। স্নায়ুর শল্য চিকিৎসক রয়েছেন এক জন। এ ছাড়াও ২ জন রেডিওলজিস্ট, ৫ জন ওটি টেকনিশায়ান থাকার কথা, যাঁদের এক জনও নেই। ৪০ জন নার্সের জায়গায় রয়েছেন ১৭ জন। অমিতাভবাবুর দাবি, “বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অন্য বিভাগের চিকিৎসক-কর্মীদের সাহায্যে ট্রমা কেয়ার সেন্টারটি চলছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ তিনটে বিভাগ থেকে চিকিৎসক চলে গেলে কী হবে বুঝতে পারছেন!” প্রশ্ন উঠেছে, তিন কোটি টাকার উপর অত্যাধুনিক যন্ত্র কর্মীর অভাবে মাসের পর মাস পড়েছিল। ফের কী সেই অবস্থা ফিরতে চলেছে? মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি চিকিৎসক পাওয়া যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy