Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কুলটি ওয়াগন কারখানার আধুনিকীকরণের প্রস্তাব

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রস্তাব পাঠানোর পরে সেলের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করে গিয়েছেন।

কাজ চলছে কুলটি ওয়াগন কারখানায়। ছবি: পাপন চৌধুরী

কাজ চলছে কুলটি ওয়াগন কারখানায়। ছবি: পাপন চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৫০
Share: Save:

অভাব রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর। বাইরে থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হচ্ছে। এ সবের জেরে মাঝে-মধ্যে মার খাচ্ছে কুলটি ওয়াগন কারখানার উৎপাদন। এই পরিস্থিতিতে সেল এবং রাইটসের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য সেলের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তা গৃহীত হলে কারখানার উৎপাদন বাড়বে বলে তাঁদের আশা। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সেলের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করে গিয়েছে।

২০১০ সালের ৩০ অক্টোবর তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেল এবং সেলের এই যৌথ উদ্যোগের শিলান্যাস করেন। সাত বছর বন্ধ পড়ে থাকা ইস্কোর কুলটি কারখানার ২ ও ৩ নম্বর স্প্যানপাইপ বিভাগে এই কারখানা চালু হয়। ঠিক হয়, এখানে বছরে ১২০০ নতুন ওয়াগন তৈরি হবে। সাড়ে তিনশো পুরনো ওয়াগনের সংস্কার হবে। ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর প্রথম এই কারখানায় ১৬টি ওয়াগনের পুরনো একটি রেক সংস্কারের জন্য আনা হয়। সেই থেকে পথচলা শুরু করেছে এই কুলটি ওয়াগন কারখানা।

কারখানার সিইও কে চন্দ্রশেখর জানান, মূল দু’টি যন্ত্রাংশ ‘বগিসেট’ ও ‘হুইলসেট’ ছাড়া নতুন ওয়াগন সম্পূর্ণ হয় না। উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় তাঁরা এই যন্ত্রাংশগুলি বানাতে পারেন না। ফলে, অন্য জায়গা থেকে সেগুলি আমদানি করতে হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, চাহিদামতো এই যন্ত্রাংশ পাচ্ছেন না। ফলে, নিয়মিত উৎপাদন মার খাচ্ছে। সিইও জানান, প্রতি মাসে তাঁরা একশোটি নতুন ওয়াগন তৈরি করে সরবরাহ করতে সক্ষম। কিন্তু ওই দু’টি যন্ত্রাংশের অভাবে মাসে ৩৫-৪০টির বেশি ওয়াগন তৈরি করতে পারছেন না। সম্প্রতি রেলবোর্ডের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, চাহিদা মেটাতে এই দু’টি যন্ত্রাংশ চিন থেকে আমদানি করা হবে। কিন্তু বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি করে কারখানার উৎপাদন খরচ আয়ত্তে রাখা যাবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ওয়াগন কারখানার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য তাঁরা সেল কর্তৃপক্ষের কাছে আধুনিকীকরণের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন বলে জানান সিইও কে চন্দ্রশেখর। তিনি বলেন, ‘‘বন্ধ পড়ে থাকা কুলটি কারখানার ফাউন্ড্রি বিভাগটিকে আমরা চেয়েছি। সেখানে বগিসেট ও হুইলসেট তৈরি করে চাহিদা মেটাতে পারব।’’ তিনি আরও জানান, সেল কর্তৃপক্ষও ফাউন্ড্রি বিভাগটির সামান্য সংস্কার করে নিজেদের তত্ত্বাবধানে এই যন্ত্রাংশগুলি তৈরি করে ওয়াগন কারখানায় সরবরাহ করতে পারেন। সিইও-র দাবি, তাঁদের এই প্রস্তাব অনুমোদন হলে কারখানার উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনই স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রস্তাব পাঠানোর পরে সেলের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কারখানা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত ভট্টাচার্য জানান, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পেরেও গত অর্থবর্ষে প্রায় ৭০ কোটি টাকা লাভ হয়েছে। বছরে ১২০০ ওয়াগন তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে লাভের অঙ্ক বাড়বে বলে তাঁরা মনে করছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol Wagon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE