শহরে ঢুকেছে ছেলেধরা, এই রটনা বেশ কয়েক দিন ধরেই ঘুরেছিল ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য়। তার জেরে নদিয়ার বাসিন্দা দুই যুবকের গণপিটুনিতে মৃত্যুও হয়। কালনার বারুইপাড়ায় ওই গণপিটুনির মামলায় শুক্রবার থেকে শুরু হল সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব। এই মামলায় সাক্ষ্য দিতে আসার আগে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগকারীর।
পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা সাত জনের একটি দল গাছে পোকার হামলা রোখার কীটনাশক বিক্রি করতে বারুইপাড়ায় আসেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ পরিচয় ও পেশা জানতে চান ওই দলটির কাছে। এর পরেই ওই দলটি সঙ্গে থাকা ফল-ফুলের ক্যাটালগ ও ব্যাগে থাকা স্প্রে’র যন্ত্রপাতি দেখান তাঁরা। অভিযোগ, সে সব না শুনে তাঁদের উপরে চড়াও হয় জড়ো হওয়া জনতার একাংশ। দু’জন পালিয়ে যান। অন্য পাঁচ জনকে এলোপাথাড়ি মারধর করা হয়। তাতে জয়ন্ত বিশ্বাস-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়। বাকিরা দীর্ঘ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে সুস্থ হন।
পরে এই ঘটনায় জয়ন্তবাবুর ছেলে রাজুবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা দায়ের হয় ২৬ জনের বিরুদ্ধে। এ দিন ওই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় কালনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে। সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনেই ডাকা হয় রাজুবাবুকে। মামলায় এক জন সরকারি আইনজীবী ছিলেন এ দিন। অভিযুক্তদের তরফে হাজির ছিলেন ন’জন আইনজীবী। ঘটনার সময় তিনি কোথায় ছিলেন, কখন কালনায় এসেছিলেন— রাজুবাবুকে এমনই নানা প্রশ্ন করেন আইনজীবীরা।
সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, আগামী ৯ নভেম্বর আদালতে ফের রাজুবাবুকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে রাজুবাবু আদালতে জানান, তাঁকে অজ্ঞাতপরিচয় এক জন হুমকি দিয়েছেন। বিচারক তপনকুমার মণ্ডল তাঁকে এ বিষয়ে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলেন ও পুলিশকে নির্দেশ দেন, আদালতে আসার আগে রাজুবাবুকে যেন পুলিশি পাহারায় নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের এক জনের বিচার চলছে জুভেনাইল আদালতে। সাত জন উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে মুক্ত। ১২ জন জেলে বিচারাধীন বন্দি এবং ছ’জন পলাতক। পুলিশ জানায়, ধৃত পাঁচ জনকে ‘টিআই প্যারেডে’ সনাক্ত করেছেন গণপিটুনির ঘটনায় জীবিত সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy