Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাছে বেঁধে ‘মার’ সুপারভাইজারকে

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কাজে বেশ কিছুদিন ভিন্‌ রাজ্যে ছিলেন সুপারভাইজার শেখ হাবিবুল। রবিবার রাতে তিনি বাড়ি ফেরেন। সোমবার ভোরেই বিজেপির লোকেরা ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি ও আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯ ০০:০৪
Share: Save:

গলায় গামছা দিয়ে বাড়ি থেকে বার করে এনে গাছে বেঁধে এক তৃণমূল কর্মী তথা একশো দিনের সুপারভাইজারকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। সোমবার ভোরে মেমারি ১ ব্লকের দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের জুজারপুর গ্রামে ওই ঘটনায় খবর পেয়ে পুলিশ যায়। বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুলিশকর্মীরাও। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, দলের এক কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদ করায় তৃণমূলই পাল্টা হামলা করেছে। মেমারি থানার দাবি, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক কাজে বেশ কিছুদিন ভিন্‌ রাজ্যে ছিলেন সুপারভাইজার শেখ হাবিবুল। রবিবার রাতে তিনি বাড়ি ফেরেন। সোমবার ভোরেই বিজেপির লোকেরা ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে। এ দিন মেমারি থানায় দাঁড়িয়ে ওই সুপারইভাইজারের দাবি, “ভোর থেকে বিজেপির লোকেরা আমার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। আমি বোঝানোর চেষ্টা করি, একশো দিনের প্রকল্পে নর্দমা সংস্কার নিয়ে যে কাজের জন্যে ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবি করা হচ্ছে, তখন আমি সুপারভাইজার ছিলাম না। কথার মাঝেই বিজেপির কয়েকজন পিছন দিক দিয়ে গলায় গামছা দিয়ে দেয়। তার পরে টানতে টানতে রাস্তায় নামিয়ে মারধর করতে থাকে।’’ পরে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। প্রতিবাদে মহিলারা রাস্তায় নামলে তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় আনে।

গত কয়েকদিন ধরেই ওই গ্রামে একশো দিনের টাকা চেয়ে এক সুপারভাইজারের বাড়ি দফায় দফায় ঘেরাও করার অভিযোগ উঠেছিল। রবিবার ওই সুপারভাইজারের বাড়িতে তালা দেখে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। সোমবার মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কোনও অভিযোগ থাকলে পঞ্চায়েত ও ব্লক দফতরে লিখিত ভাবে জমা দেওয়ার জন্যে রবিবারই বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও গাছে বেঁধে মারধরের ঘটনা অনভিপ্রেত। এ রকম চলতে থাকলে আমাদেরও রাস্তায় নেমে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিজেপিকে জবাব দিতে হবে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের দাবি, “জনগণ তাঁর অধিকার ফেরতের জন্যে রাস্তায় নামলে কোনও দল বা নেতা কি বাধা দিল, তা কেউ শুনবে না। তবে ওই গ্রামে আমাদের এক জনকে রাস্তায় ধরে কেন মারা হল, তার জবাব নিতে গিয়েছিল আমাদের ছেলেরা। তখন তাঁদের আক্রমণ করে তৃণমূল।’’

আউশগ্রামের দিগনগরে সালিশি সভায় তৃণমূল নেতারা না আসায় তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। আটকাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ তিন জনকে আটক করেছে।

তৃণমূলের অভিযোগ, দলের এক স্থানীয় নেতা ও এক সুপারভাইজারকে কাটমানির হিসেব চেয়ে সালিশি ডাকা হয়েছিল। তাঁরা না যাওয়ায় রথতলায় দলীয় কার্যালয়ে আসে বিজেপির লোকজন। আউশগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি শেখ সালেক রহমানের অভিযোগ, দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির পতাকা টাঙানোর পরে প্রায় শ’চারেক লোক হাতে লাঠি, রড নিয়ে দলের দুই কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায়। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নির্মল মণ্ডলের দাবি, ‘‘বিজেপির লোকজন হিসেব চাইতে এলে বলি, প্রশাসনের কাছে তিনি হিসেব দেব। সালিশিতে না যাওয়ায় বাড়িতে হামলা চালানো হয়।’’ যদিও বিজেপির দিগনগর ১ অঞ্চল নেতা অরূপ আচার্যের দাবি, ওই নেতা টাকার হিসেব না দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়ায় গ্রামে। তারই বহিঃপ্রকাশ হয়েছে। তৃণমূল কার্যালয়ে পতাকা টাঙানোর কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Graft Crime BJP TMC durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE