Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোটে হার, তাই জল বন্ধের নালিশ

লোকসভা ভোটে এই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রায় ১,৭০০ ভোটে হেরেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এরই ‘প্রতিশোধ’ নিতে ফলপ্রকাশের পরে থেকে ট্যাঙ্কার পাঠাচ্ছে না তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভা।

কুলটির বেজডিহি গ্রামে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

কুলটির বেজডিহি গ্রামে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৯ ০০:১৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে গত ২৩মে। তার পরে থেকেই গ্রামে জলের ট্যাঙ্কার আসছে না, এমনই অভিযোগ করলেন আসানসোল পুরসভার ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটির বেজডিহি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। আর তার জেরে ফলপ্রকাশের পরে থেকেই প্রবল জল-সঙ্কট দেখা দিয়েছে এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার এলাকাবাসী পথে নেমে বিক্ষোভ দেখালেন।

লোকসভা ভোটে এই ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রায় ১,৭০০ ভোটে হেরেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এরই ‘প্রতিশোধ’ নিতে ফলপ্রকাশের পরে থেকে ট্যাঙ্কার পাঠাচ্ছে না তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভা। যদিও কাউন্সিলর উত্তম বাউড়ি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘জল নিয়ে আমি রাজনীতি করি না। ওই গ্রামে ফি দিন মোট ১৯ ট্যাঙ্কার জল প্রয়োজন। প্রচণ্ড গরমে সব এলাকায় জল পৌঁছতে হচ্ছে। যে কোনও কারণেই হোক গত কয়েক দিন ওই এলাকায় জল আসেনি। আজ, শনিবার সকাল থেকেই জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই গ্রামে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ রয়েছেন। বাসিন্দারা জানান, ফি বছর গ্রীষ্মেই পানীয় জলের চরম সঙ্কট হয়। গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের কল নেই। তবে পুরসভার নতুন জল প্রকল্পের পাইপলাইন পাতার পরিকল্পনা রয়েছে। বছর কয়েক আগে গ্রামের একাধিক জায়গায় গভীর নলকূপ খুঁড়ে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু গরমে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর অত্যন্ত নীচে নেমে যাওয়ায় প্রায় সাত মাস ধরে ওই কলগুলিতে জল পড়ছে না বলে গ্রামবাসীরা জানান। হাতে গোনা কয়েকটি চাপা কলেও জল মিলছে না। তা ছাড়া গ্রামে একাধিক পুকুর, কুয়ো থাকলেও সেগুলি শুকিয়ে গিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে জল-সঙ্কট মেটাতে পুরসভা নিয়মিত গ্রামে জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো শুরু করেছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় ২২ দিন ট্যাঙ্কার আসছে না।

শুক্রবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, জলের দাবিতে পুরুষদের পাশাপাশি, বাড়ির মহিলারাও জলের পাত্র হাতে রাস্তায় নেমেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা শকুন্তলা বাউড়ির বক্তব্য, ‘‘দিনে এক বালতি পানীয় জল জোগাড় করতেই ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে ভোর রাতে পাশের গ্রাম থেকে জল আনতে হচ্ছে।’’ অন্য এক বাসিন্দা নয়নতারা দাসের অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলরকে অনেক দিন ধরে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানানো হচ্ছে। কিন্তু লাভ হয়নি।’’

যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায়ের আশ্বাস, ‘‘পুরসভা এলাকায় কেউ নির্জলা থাকবেন না। খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Lok Sabha Election 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE