Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

খণ্ডঘোষে পুড়ে মৃত দুই নাবালক

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটির দেওয়াল ও খড়ের চালের বাড়ি মফিজুলদের। তাদের বাবা শেখ ফজু সেহেরাবাজারে রাস্তার ধারে মুরগির মাংস বিক্রি করেন।

পুড়ে গিয়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পুড়ে গিয়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪১
Share: Save:

অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল নাবালক দুই ভাইয়ের। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খণ্ডঘোষের সগড়াই পঞ্চায়েতের কামদেবপুর গ্রামে। এক সঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ জানায়, মৃত শেখ মফিজুল (১২) স্থানীয় সেহারাবাজার চন্দ্রকুমার ইনস্টিটিউশনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে তার ভাই শেখ মহিদুলের (৪) মৃত্যু হয়েছে শর্ট সার্কিটের জেরে বিপর্যয়ে, মনে করছে পুলিশ।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটির দেওয়াল ও খড়ের চালের বাড়ি মফিজুলদের। তাদের বাবা শেখ ফজু সেহেরাবাজারে রাস্তার ধারে মুরগির মাংস বিক্রি করেন। মা মমিনা জানান, সোমবার রাতে তিনি দুই ছেলেকে নিয়ে ঘরে শুয়েছিলেন। পোড়া গন্ধে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। কী হয়েছে, দেখার জন্য বাইরে বেরোতেই দেখেন, খড়ের চালে আগুন ধরে গিয়েছে। ছুটে গিয়ে ঘরের ভিতর থেকে ছেলেদের বাইরে আনার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ে জ্বলতে থাকা খড়ের চাল ছোট ছেলের গায়ের উপর পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘চিৎকার শুনে বড় ছেলের ঘুম ভেঙে যায়। সে ঘুমন্ত অবস্থায় ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে আগুনে পুড়তে থাকে।’’ পুলিশ জানায়, দুই ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মমিনাও জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই দুই ভাই ও মাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা দুই ছেলেকে মৃত বলে জানান। পুলিশের অনুমান, বিদ্যুতের তারে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল খড়ের চালে।

পড়শিরা জানান, তাঁরা ছেলে দু’টিকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। বাড়ি থেকে পাম্পসেট নিয়ে এসে, বালতি দিয়ে জল ছুড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ওই এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘‘পাড়ার লোকেরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মর্মান্তিক দুর্ঘটনার হাত থেকে বাড়ি বা বালকেরা কেউ রক্ষা পেল না। আমরা ওই পরিবারের পাশে রয়েছি।’’ শেখ ফজু বলেন, ‘‘নতুন বছরের প্রথম দিন বলে অনেক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা ছিল। আমি বাড়িতে থাকলে এত বড় বিপর্যয় নেমে আসত না।’’ দুই সন্তানকে হারিয়ে বিলাপ করছেন স্বামী-স্ত্রী। মাঝে-মধ্যেই অচৈতন্য হয়ে পড়ছেন মমিনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেষকৃত্যে হাজির ছিল গোটা গ্রাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khandaghosh Minors Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE