রাজ্য সড়কে অবাধে চলছে মোটরচালিত ভ্যান। —নিজস্ব চিত্র।
ফি দিনের মতো মোটরচালিত ভ্যানে চড়ে মাঠে বুধবার খেতমজুরি করতে যাচ্ছিলেন বাসুদেব পুইলে (৪৩)। পথে পাথরবোঝাই একটি ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ভ্যানটির। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই খেতমজুরের। বুধবার কাটোয়ার ঘটনা। জখম ভ্যানে থাকা আরও ছ’জন। এই ঘটনার পরে এলাকাবাসীর ক্ষোভ, জাতীয় ও রাজ্য সড়কে এই ধরনের ভ্যান ও টোটো চলাচলে নিষেধ রয়েছে। কিন্তু সে নিষেধ মানা হয় না।
পুলিশ জানায়, বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ পলসোনা পঞ্চায়েতের রোন্ডা গ্রাম থেকে প্রায় কুড়ি জন খেতমজুর একটি ভ্যানে চড়ে দাঁইহাটে যাচ্ছিলেন। মালডাঙা-মন্তেশ্বর রোড ধরে যাওয়ার সময়ে করজগ্রাম মোড়ে আচমকা বিপত্তি ঘটে। কাটোয়ার দিক থেকে আসা একটি পাথরবোঝাই ডাম্পারের সঙ্গে ভ্যানটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাসুদেববাবু। ভ্যানে থাকা ছ’জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে বছর পঞ্চান্নর প্রশান্ত পুইলের অবস্থা গুরুতর। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোন্ডা গ্রামেরই বাসিন্দা, জখম চার জন এবং মেঝিয়ারির বাসিন্দা, জখম এক জন বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, ঘটনার পরেই ডাম্পারের চালক চম্পট দেয়।
এই ঘটনার পরে ফের প্রশ্ন উঠেছে, কী ভাবে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক ধরে ভ্যান ও টোটো চলছে। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যদিও তা মানা হয় না বলেই অভিজ্ঞতা স্থানীয়দের। আর তা না হওয়াতে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। মাস খানেক আগেই এসটিকেকে রোডে ম্যাটা়ডরের ধাক্কায় ভ্যান উল্টে মারা যান কয়েক জন। একই ঘটনা হয়েছিল গুসকরাতেও।
পরপর এমন ঘটনার পরেও ফি দিন ভিন্ন ছবি দেখা যায়। কী রকম? এক যাত্রী জানান, কাটোয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে একশো মিটার দূরে দাঁড়ায় ভ্যান ও টোটোগুলি। সেখান থেকেই তোলা হয় যাত্রী। এমনকী, এসটিকেকে রোড, বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়ক ও মালডাঙা-মন্তেশ্বর রাজ্য সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময়েও গাড়ি থামিয়ে যাত্রী, খড়ের বোঝা-সহ নানা পণ্যও তোলা হয়। যাতায়াত চলে দাঁইহাট, শ্রীখণ্ড পর্যন্ত। অনেক সময়ে দেখা যায়, জায়গা না থাকলেও পাঁচ-ছ’জন গাদাগাদি করে বসে রয়েছেন ভ্যান, টোটোয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাজিগ্রামের বাসিন্দা এক ভ্যান চালক বলেন, ‘‘সব নিয়ম জানি। কিন্তু মানতে গেলে তো পেটে টান পড়বে।’’ বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়নে উপযুক্ত নজরদারি চালায় না পুলিশ-প্রশাসন। যদিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দাবি করেছেন মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy