এ ছবিই চেনা। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের প্রচারের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল এলাকার জল-সমস্যা। তা মেটাতে প্রতিশ্রুতিও দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু তার পরেও সালানপুরের রূপনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় জল-সঙ্কট মেটেনি বলেই জানান এলাকাবাসী। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনেরই একটি অংশের মতে, জল-সঙ্কট মিটছে না জলের অজস্র অবৈধ সংযোগের জন্যই।
ঠিক কী পরিস্থিতি? রূপনারায়ণপুর পঞ্চায়েত সূত্রেই জানা গিয়েছে, জল-সমস্যা কেন খতিয়ে দেখতে গিয়েই বিষয়টি প্রথম নজরে আসে। দেখা যায়, মূল পাইপলাইন ফুটো করে যথেচ্ছ সংখ্যায় অবৈধ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে পিঠাইকেয়ারি উচ্চ জলাধারটি জলে পূর্ণ হচ্ছে না। এর জেরে এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই জলাধারটির জলধারণ ক্ষমতা প্রায় ১২ লক্ষ লিটার। জলাধারটি ভরতে সময় লাগে প্রায় ১২ ঘণ্টা। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, পরিস্থিতি এমনই যে, প্রায় ২৪ ঘণ্টাতেও জলাধার পূর্ণ হচ্ছে না।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা যায়, কল্যাণেশ্বরী জল শোধনাগার থেকে পাম্পের সাহায্যে জল প্রথমে দেন্দুয়া ‘বুস্টিং স্টেশনে’ আনা হয়। সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে রূপনারায়ণপুরের পিঠাইকেয়ারি উচ্চ জলাধারে জল তোলা হয়। পরে জলাধার থেকে সার্ভিস পাইপলাইনের মাধ্যমে এলাকায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বুস্টিং স্টেশন থেকে পিঠাইকেয়ারি উচ্চ জলাধারে জল তোলার পাইপ লাইনেই যথেচ্ছ ফুটো করে অবৈধ সংযোগ নিয়েছেন এলাকাবাসীর একাংশ, জানান ওই দফতরের আধিকারিকেরা।
এই পরিস্থিতিতে অন্য সমস্যাও দেখা গিয়েছে। এক দিকে যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল মিলছে না, তেমনই পাইপে ফুটো থাকার জন্য বাইরের আবর্জনা, নোংরা জলও পরিশুদ্ধ জলের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। ফলে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
রূপনারায়ণপুর মূল শহর-সহ ফকরাডি, মহাবীর কলোনি, পশ্চিম রাঙামাটি, পিঠাইকেয়ারিতে জল-সমস্যা অত্যন্ত বেশি। এলাকাবাসী জানান, শীতের শুরুতেই এই হাল। এখনও জলাশয়গুলিতে যথেষ্ট জল থাকায় সঙ্কট হয়নি। কিন্তু মাস তিনেক বাদে গ্রীষ্মে কার্যত জল-শূন্য হয়ে যাবে এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দা ত্রিদিব চট্টরাজের বক্তব্য, ‘‘সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের কাছে বারবার আর্জি জানানো হয়েছে।’’ তবে জলের এই সমস্যা নিয়ে চিন্তিত পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষও। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল মজুমদার বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষে যাতে জল-সঙ্কটে না ভোগেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা পদক্ষেপ করছি।’’ কিন্তু এর পরেও আদৌ সমস্যা মিটবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান নাগরিকদের একটা বড় অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy