Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

জমিতে জল, ক্ষতি বাড়ার আশঙ্কা চাষির

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

জল জমেছে ধানখেতে। বুদবুদের মাড়ো গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র

জল জমেছে ধানখেতে। বুদবুদের মাড়ো গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা ও রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০২:২২
Share: Save:

লাগাতার ঝড়-বৃষ্টির জেরে কোথাও ধান জমিতে জল জমে আছে, আবার আনাজের মাচা ভেঙে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে, ক্ষতি অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার চাষিরা।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ৪৫০ হেক্টরের মতো বোরো ধানের জমি ঝড়-বৃষ্টির ফলে প্রভাবিত হয়েছে। ২৫০ হেক্টর তিলও প্রভাবিত হয়েছে। জেলা জুড়ে প্রায় ২,০০০ হেক্টর আনাজের মধ্যে ৭০০ হেক্টর প্রভাবিত হয়েছে। চাষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর।

এই জেলায় এই সময়ে ঢেঁড়শ, ঝিঙে, উচ্ছে, টোম্যাটো, কুমড়ো, ভুট্টার চাষ করেছেন বহু চাষিরা। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, আমপানের প্রভাব যে পড়বে, তা আগেই তাঁদের জানিয়ে সতর্ক করেছিল কৃষি দফতর। ফসল তুলে নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছিল দফতরের তরফে। কিছু ক্ষেত্রে কাজও হয়েছে বলে দাবি দফতরের। চাষিরা জানিয়েছেন, বোরো ধান পেকে যাওয়ায় অনেক চাষিই তা বাড়িতে তুলে নিয়েছেন। কিন্তু এখনও কিছু জমিতে ধান কেটে পড়ে আছে বা কাটা হয়নি। এমনিতেই এপ্রিল মাসের শেষ থেকে মাঝেমধ্যে বৃষ্টির জেরে সমস্যায় পড়তে হয়েছে চাষিদের। তার সঙ্গে আমপানের প্রভাবে আনাজ খেতে অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি চাষিদের।

কাঁকসার গাংবিলের চাষি দেবনাথ চৌধুরী জানান, প্রায় সাত বিঘা জমিতে এ বছর ঢেঁড়শ, ভুট্টা, শসা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ভুট্টা ও ঢেঁড়শ গাছের ফুল অনেক নষ্ট হয়েছে। ভেঙে গিয়েছে গাছও। ফলে, সেগুলি থেকে আর ফসল পাওয়া যাবে না। তা ছাড়া, জমিতেও জল জমেছে। আনাজের মাচাগুলিও ভেঙে পড়েছে। খুবই ক্ষতি হয়ে গেল।’’

এ দিকে, জমিতে জল জমে যাওয়ায় ধানেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। প্রায় ২,০০০ হেক্টর বোরো ধানের চাষ হয়েছে কাঁকসা ব্লকেই। এলাকার চাষিরা জানান, অনেকেই ধান কেটে জমির উপরে ফেলে রেখেছিলেন। সেই সব ধান নষ্ট হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। চাষিরা জানান, পাকা ধানের গাছগুলি ঝড়ে নুইয়ে পড়েছে। ঝরে গিয়েছে ধানও।

ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, অনেক চাষিই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জমি থেকে জল বার করতে শুরু করে দেন। বুদবুদের দেবশালা, মানকরের মাড়ো-সহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষি জমিতে জল জমে রয়েছে। মাড়োর চাষি সঞ্জয় রুইদাস বলেন, ‘‘ধান কেটে জমিতে ফেলে রেখেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টি-ঝড়ে সেই ধান জমি থেকে তোলা যাবে কি না বুঝতে পারছি না।’’ শুধু ধান জমিই নয়, জল জমেছে কৃষি জমিতেও।

রানিগঞ্জের নূপুরেও করলা, বরবটি, কুমড়ো গাছ-সহ নানা আনাজ খেত একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চাষি অসিত গরাই, মোহিত মণ্ডল, তারাপদ পালরা জানান, নূপুর গ্রামে প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে চাষ হয়েছিল। সবই ক্ষতির মুখে।

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়-বৃষ্টিতে বেশ কিছু জমিতে ক্ষতি হয়েছে। জেলা উপকৃষি অধিকর্তা সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছি। সমস্ত বিষয় রাজ্যকে জানানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE