রাজ্য সরকার জানায়, যতগুলি আসন, তত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ১ জুন থেকে বাস চালানো যাবে। কিন্তু এ দিন বাস নামেনি।
সরকারি নির্দেশ থাকলেও ১ জুন থেকে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস পরিষেবা চালু হল না আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমায়। কবে থেকে চলবে বাস, তা-ও নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি জেলা আধিকারিক ও বাস মালিকেরা।
বিভিন্ন বাস মালিক সংগঠন সূত্রে জানা যায়, আসানসোল মহকুমার শতাধিক রুটে চারশোরও বেশি মিনিবাস এবং জেলার বিভিন্ন রুটে সাড়ে চারশোরও বেশি বড় বাস চলে। প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ যাত্রী বাস-পরিবহণের উপরে ভরসা করেন। প্রত্যক্ষ পরিবহণকর্মীর সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।
রাজ্য সরকার জানায়, যতগুলি আসন, তত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ১ জুন থেকে বাস চালানো যাবে। কিন্তু এ দিন বাস নামেনি। এ বিষয়ে বাস অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ বিজন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরনো ভাড়ায় সরকারি বিধি মেনে বাস চালানো সম্ভব নয়।’’
দুর্গাপুরের মিনিবাস মালিক সংগঠনগুলিও দাবি জানিয়েছিল, পুরনো হারের ভাড়ায় মিনিবাস চালানো সম্ভব নয়। তা করতে হলে, বাসকর্মীদের বেতন, জ্বালানি তেলের খরচ রাজ্য সরকারকে দেওয়ার আর্জি জানান তাঁরা। কিন্তু এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও জানায়নি রাজ্য সরকার। মিনিবাস মালিকদের ব্যাখ্যা, বাসে আসন সংখ্যা ২৮টি। স্বাস্থ্যবিধি মানলে সর্বোচ্চ ২৮ জন যাত্রীই উঠতে পারবেন। কিন্তু মিনিবাস চালু হওয়া থেকে শেষ ‘ট্রিপ’ পর্যন্ত দিনের সব সময় সব আসনে যাত্রী থাকবেন, এমন নিশ্চয়তা নেই। আবার ২৮ জন যাত্রী হয়ে গেলে কী ভাবে নির্দিষ্ট স্টপেজে বাস দাঁড় করানো হবে, সে ক্ষেত্রে কী ভাবে যাত্রী না তুলে বাস চলাচল স্বাভাবিক রাখা যাবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে তাঁদের।
এই পরিস্থিতিতে আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘কবে বাস চলবে তা এখনই জানানো সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ সূত্রের খবর, আজ, মঙ্গলবার সেই বৈঠক হওয়ার কথা। দুর্গাপুরে মিনিবাস মালিকদের অন্যতম সংগঠন ‘দুর্গাপুর মিনিবাস অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক অলোক চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণের খরচ, বাস চালানোর জন্য জ্বালানি তেল, বাস পিছু তিন জন বাসকর্মীর বেতন দেওয়া, ‘মাস্ক’, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার সরবরাহ করা, কাগজপত্র-সহ নানা খরচ রয়েছে। সরকারি ভর্তুকি ছাড়া সমস্যার সমাধান হবে না।’’ তাঁর প্রস্তাব, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হোক। বিষয়টি নিয়ে মিনিবাস মালিকেরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দেবেন বলে জানান অলোকবাবু।
যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক (পরিবহণ) প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকার বেশ কিছু বিধি-নিষেধ রেখে বাস চালানোর কথা বলেছেন। মালিকেরা ইচ্ছে করলেই রাস্তায় বাস নামাতে পারেন।’’
এ দিকে, আসানসোলের রাস্তায় বেসরকারি বাস না চলায়, গণ পরিবহণে সমস্যা তৈরি হয়েছে। যাত্রীরা জানান, অটো-টোটোয় দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে হলে অটো, টোটো রিজার্ভ করার জন্য সাধারণ সময়ের তুলনায় এখন কয়েক গুণ টাকা দিতে হচ্ছে। আসানসোলে এসবিএসটিসি স্টেশন থেকে কোর্ট পর্যন্ত দিনে চারটি, স্টেশন থেকে বার্নপুর পর্যন্ত চারটি, আসানসোল থেকে চিত্তরঞ্জন পর্যন্ত দিনে দু’টি বাস চালাচ্ছে। কিন্তু এই সংখ্যক বাস চলাচল মোটেও কাজে লাগছে না বলে জানান যাত্রীরা। যদিও পরিবহণ সংস্থাটি জানায়, শহরের মধ্যে এই মুহূর্তে এর থেকে বেশি বাস চালানো সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy