পূর্ব সাহাপুরে এই বাড়িতেই ডাকাতির চেষ্টা হয়। নিজস্ব চিত্র
ব্যবসায়ীর বাড়িতে চড়াও হয়েছিল ডাকাত দল। চিৎকার-চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে পড়ায় পালানোর চেষ্টা করছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ব্যবসায়ী ও তাঁর মায়ের চেষ্টায় ধরা পড়ে গেল এক জন। রবিবার রাতে কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাহাপুর গ্রামে পাকড়াও যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরে এমন অভিযোগই করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডাকাতির অভিযোগে ধৃত যুবককে একপ্রস্ত মারধর করে জনতা। আহত অবস্থায় তাকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন ওই ব্যবসায়ী মিরন মণ্ডলও।
পূর্ব সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের বাসিন্দা মিরনবাবুর লোহালক্কড়ের ব্যবসা রয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, রবিবার রাতে এসটিকেকে রোডের কাছে তাদের বাড়িতে পাঁচ দুষ্কৃতী চড়াও হয়। বাড়ির একতলায় ছিলেন মিরনবাবুর মা মঞ্জুদেবী, বাবা নির্মলবাবু ও বছর উনিশের ভাগ্না বিক্রম হাওলাদার। গ্রিলের তালা ভেঙে ঢুকে মুখোশে মুখ ঢাকা দুষ্কৃতীরা তাঁদের ডেকে তোলে। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দু’টি মাফলার দিয়ে পিছমোড়া করে বেঁধে ফেলা হয় বিক্রম ও নির্মলবাবুকে। নির্মলবাবুর মুখও বেঁধে দেওয়া হয়। অভিযোগ, ঘর লন্ডভন্ড করে আলমারি থেকে টাকা-গয়না লুট করা হয়।
এর পরেই দুষ্কৃতীরা জানতে চায়, আর কোথায় টাকা রয়েছে। মঞ্জুদেবী জানান, তাঁকে ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা বাড়ির দোতলায় নিয়ে যায়। ডেকে তোলা হয় ঘুমন্ত ছেলেকে। কিন্তু মিরনবাবু উঠতে দেরি করায় মেজাজ হারায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ব্যবসায়ী জানান, জানলা দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে ঘর খুলতে বলে তারা। তা না করে তিনি ফোনে এক পরিচিতকে খবর দেওয়ার চেষ্টা করলে দরজা ভেঙে ঢুকে আসে দুষ্কৃতীরা। ঘরে ঢুকেই তাঁর দিকে এক জন রড ছুড়ে মারে। তাতে মাথায় আঘাত লাগে তাঁর। বিছানায় পড়ে যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করেন তিনি।
মিরনবাবু পুলিশকে জানান, এরই মধ্যে তাঁর বাবার হাতের ফাঁস আলগা হয়ে গেলে তিনি বাড়ির অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে চিৎকার শুরু করেন। তাতেই এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হন। তাতে ঘাবড়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তারা দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে। তখন এক দুষ্কৃতীকে আঁকড়ে ধরে ফেলেন তিনি। ধস্তাধস্তি শুরু হয় দু’জনের। সেই সময়ে মঞ্জুদেবী ঘরের ছিটকিনি আটকে দেন, যাতে পাকড়াও যুবক পালাতে না পারে। বাসিন্দারা এসে পৌঁছলে তিনি ঘর খুলে দেন। ধরা পড়ে যায় ওই যুবক।
সোমবার মঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে লড়াইয়ে ছেলের শরীরের নানা জায়গায় চোট লেগেছে।’’ অন্য দুষ্কৃতীরা টাকা, গয়না, মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। কালনা থানার পুলিশ জানায়, ধৃত যুবককে জেরা করে তথ্য জোগাড় করা হবে। দুষ্কৃতী দলের বাকি সদস্যদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy