অসহায়: পরিবারের সঙ্গে কমল মল্লিক। —নিজস্ব চিত্র
তিনি ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিক। করোনা আবহে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেছেন। কিন্তু এখন কাজ মিলছে না এবং আগের কাজের মজুরিও মিলছে না বলে অভিযোগ তুললেন বাগনান-১ ব্লকের বাকসিহাট পঞ্চায়েতের মানকুরের কাজিবেড়িয়ার বাসিন্দা কমল মল্লিক নামে ওই শ্রমিক।
অর্থাভাবে ইতিমধ্যে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করেছেন। মেয়েকে কলেজে ভর্তি করিয়েছেন তাঁর কানের দুল বিক্রি করে। কমলের খেদ, ‘‘বারবার পঞ্চায়েতে এবং ব্যাঙ্কে গিয়েও কাজের টাকার কোনও হদিস মিলছে না। খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। আমার প্রাপ্যটা পাব না? আধপেটা খেয়ে দিন কাটছে। এখন পঞ্চায়েত কাজও দিচ্ছে না। কী যে করি!’’ গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে লকডাউনে গ্রামে ফেরা সকলকে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। তারপরেও এলাকার সব জবকার্ডধারীকে যে ওই প্রকল্পে এখন কাজ দেওয়া যাচ্ছে না, সে অভিযোগ মেনে নিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান শেখ মর্তুজা আলি। তাঁর দাবি, ‘‘লকডাউনের আগে পঞ্চায়েতে মোট জবকার্ডের সংখ্যা ছিল সাড়ে ৬০০। লকডাউনের পর পরিযায়ী শ্রমিকরা আসার ফলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। সকলকে কাজ দেওয়া হয়। বর্ষায় কাজের পরিধি কমে গিয়েছে বলে সকলকে কাজ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’’
কিন্তু কমল তাঁর আগেকার কাজের মজুরি পাচ্ছেন না কেন? প্রধান বলেন, ‘‘সকলেই প্রায় টাকা পেয়ে গিয়েছেন। কারও ব্যাঙ্কে বা জবকার্ডে কিছু ভুল থাকলে হয়তো সমস্যা হতে পারে। কমলের তেমন কোনও সমস্যা থাকলে আমার জানা নেই। উনি পঞ্চায়েতে এসে যোগাযোগ করলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’’
কমল ঠিকাদারের অধীনে অসম, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলপ্রদেশ-সহ নানা রাজ্যের মেলায় বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করতেন। লকডাউনের ঠিক আগে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি ফিরে আসেন। পঞ্চায়েতে জবকার্ড করিয়ে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ শুরু করেন। বেশ কিছুদিন কাজ করেন। অর্থাভাবে মেয়েকে কলেজে অনার্সে ভর্তি করাতে পারেননি বলেও আক্ষেপ করেন কমল।
প্রধান অবশ্য কমলের মেয়ের পড়াশোনা চালানোর জন্য পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধান বলেন, ‘‘আগে জানলে পাশে থাকার চেষ্টা করতাম। এলাকায় বহু ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বই ও কলেজে ভর্তিতে সাহায্য করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর পড়াশোনা চালাতে যদি সমস্যা হয়, তা হলে পঞ্চায়েত পাশে দাঁড়াবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy