—প্রতীকী ছবি
কোন্দলের জেরে ভেঙে গিয়েছে পুরবোর্ড। চন্দননগর পুরসভা এখন দেখভাল করছেন পুর-কমিশনার। কাজও হচ্ছে শহরে। কিন্তু ফাঁপরে পড়েছে পুরসভার আওতাধীন শহরের ১৫টি স্কুল।
স্কুলগুলির তরফে জানা গিয়েছে, পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ায় নিয়ম মতো ভেঙে গিয়েছে ওই সব স্কুলের পরিচালন সমিতিও। গত অগস্ট মাসে রাজ্য সরকার চন্দননগর পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সরিয়ে দিয়ে পুর কমিশনারের পদে বসায় স্বপন কুণ্ডুকে। বিধি অনুযায়ী, পুরসভার প্রতিটি স্কুলেও একজন করে প্রশাসক নিয়োগ করার কথা। অভিযোগ, দু’মাস পরেও স্কুলে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গত জুলাইয়ে স্কুলগুলি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শিক্ষা সমিতির শেষ বৈঠক হয়েছিল। তারপর থেকে কার্যত অভিভাবকহীন স্কুলগুলি। অক্টোবরের মাঝামাঝি পুজোর ছুটি পড়েছে। এখন কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন পরবর্তী কাজকর্ম নিয়ে।
চন্দননগর পুরসভার আওতাধীন ১৫টি স্কুল পরিচালনার জন্য পুর প্রতিনিধি, প্রশাসন ও স্কুলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি শিক্ষা সমিতি রয়েছে। স্কুল পরিচালনার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা সমিতি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন আর্থিক অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমিতির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে সমিতির তরফে সংশ্লিষ্ট দফতরে দরবার করা হয়।
চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়, কানাইলাল বিদ্যামন্দির, কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষামন্দির, দুর্গাচরণ রক্ষিত বঙ্গ বিদ্যালয়-সহ বহু নামী স্কুলই এখন বিপাকে। কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিচালন সমিতি না থাকায় রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা মিশনের প্রদত্ত টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্কুলগুলি।
অন্য একটি সমস্যার কথাও তুলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, এখনও স্কুলগুলির যাবতীয় আর্থিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে পুরোন কমিটির সম্পাদকই সই করছেন। শিক্ষকদের অনেকে বলছেন, আইনত এটি অবৈধ। পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে গিয়েছে শিক্ষা সমিতিও। ফলে পুরনো সম্পাদকের সই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হতে পারে যে কোনও মুহূর্তে। আবার তিনি সই না করলে আটকে যাবে প্রায় সমস্ত কাজ। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের অবস্থানই স্পষ্ট নয়।
শিক্ষা সমিতির সদস্য শিক্ষক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি। এই ১৫ টি স্কুলের দায়িত্ব এখন কার হাতে সেটাই পরিষ্কার নয়। কী করব আর কী করব না তাই বুঝতে পারছি না।’’
চন্দননগরের কমিশনার স্বপন কুণ্ডু দাবি করেছেন, গোটা ঘটনায় কোনও অস্বচ্ছতা নেই। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল চালানোর ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। পুরসভার নিজস্ব এডুকেশন অফিসার রয়েছেন। তাঁর কাছে যেতে পারেন স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি আমার কাছেও আসতে পারেন।’’
কমিশনারের আশ্বাসে অবশ্য তেমন সুরাহা দেখছেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলের ছোটখাটো বিষয়েও আমরা প্রশাসকের কাছে ছুটব? তা হলে পড়াশোনাটা হবে কখন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy