অভিনয়: ধৃতদের দিয়ে ঘটনার পুর্ননির্মাণ। নিজস্ব চিত্র
চলতি মাসের গোড়ায় বৈদ্যবাটীতে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে এক গয়না-ব্যবসায়ীর টাকা এবং সোনা ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনার কিনারা করল শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ। তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া গয়নার অনেকটাই উদ্ধার হয়েছে। একটি মোটরবাইকও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। শনিবার ঘটনা পুনর্নির্মাণের জন্য ধৃতদের ঘটনাস্থলে নিয়ে আসেন তদন্তকারী অফিসার তথা শেওড়াফুলি ফাঁড়ির ইন-চার্জ শুভাশিস দাস-সহ অন্য অফিসাররা।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুরজ প্রসাদ, সুরজিৎ রাহা ওরফে মঙ্গল এবং অভিজিৎ অধিকারী। সুরজের বাড়ি ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস এলাকায়। মঙ্গল এবং অভিজিৎ বৈদ্যবাটীর বাসিন্দা। আকাশ নামে ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা আরও এক দুষ্কৃতীর খোঁজ চলছে। ধৃতেরা পুলিশ হাজতে রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, তারা অপরাধ কবুল করেছে।
শেওড়াফুলি, বৈদ্যবাটী এলাকায় সম্প্রতি একাধিক চুরি-ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠছিল। এই ঘটনার কিনারা হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে পুলিশ। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার জানান, অন্য কয়েকটি ঘটনার সঙ্গে ধৃতদের যোগ রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বৈদ্যবাটী স্টেশনের কাছে ১১ নম্বর রেলগেট সংলগ্ন জায়গায় সুদর্শন আঢ্যর গয়নার দোকান। তাঁর বাড়ি স্থানীয় এনসিএম রোডে। গত ২ অক্টোবর রাত ৯টা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করে পড়শি এক তরুণীর সঙ্গে তিনি বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, বাড়ির কিছুটা আগে মাটিপাড়ায় দুষ্কৃতীরা তার উপরে চড়াও হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই রাতে ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে বাইকে সওয়ার তিন জন অ্যাঙ্গাস কোন দিকে তা জিজ্ঞাসা করে। এ থেকে পুলিশ অ্যাঙ্গাস-যোগ পায়। পরে সূত্র মারফত খবর জোগাড় করে এবং মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ওই তিন জনকে ধরা হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনার সময় ওই রাস্তায় দুষ্কৃতীরা ওঁৎ পেতে ছিল। সুদর্শনবাবুর পথ আগলে সুরজ বন্দুক দেখিয়ে তাঁর ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সুদর্শনবাবু প্রতিরোধের চেষ্টা করলে ওই দুষ্কৃতী বন্ধুকের বাঁট দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেয়। সঙ্গের তরুণী প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে সরে যেতে বলে। এর মধ্যেই আকাশ পিছন থেকে কোনও কিছু দিয়ে সুদর্শনবাবুর মাথায় মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই ব্যবসায়ী লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। কিছুটা দূরে অপর দুই দুষ্কৃতী নজর রাখছিল। ‘অপারেশন’ সেরে সকলে অ্যাঙ্গাসের দিকে পালায়।
দুষ্কৃতীদের জেরা করে সুদর্শনবাবুর থেকে ছিনিয়ে নেওয়া সোনার নাকছাবি, কানের দুল, গলার হার প্রভৃতি গয়না উদ্ধার হয়েছে। কিছু গয়না গলিয়ে ফেলা হয়েছিল। তার বাট উদ্ধার হয়েছে। কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ টাকার গয়না দুষ্কৃতীরা নিয়ে গিয়েছিল। বেশির ভাগটাই উদ্ধার করা গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy