Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চন্দননগরে ফের সতর্কবার্তা মেয়রকে

একই সঙ্গে কিছুদিন আগে মেয়র পারিষদ হওয়া এক কাউন্সিলরকে ওই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল।

রাম চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

রাম চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

প্রকাশ পাল
চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০১:৩৬
Share: Save:

শাসকদলের কাউন্সিলরদের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে পুর-পরিষেবা বারবার ধাক্কা খাচ্ছে চন্দননগরে। কিছুদিন আগেই পুরসভা চালানো নিয়ে মেয়র রাম চক্রবর্তীকে কড়া বার্তা দিয়েছিল দল। ফের সোমবার তাঁকে সতর্ক করা হল। একই সঙ্গে কিছুদিন আগে মেয়র পারিষদ হওয়া এক কাউন্সিলরকে ওই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল।

সোমবার রাতে ওই পুরসভার দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে হুগলি জেলা তৃণমূ‌লের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে অরূপের সামনেই মেয়র রাম চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন কয়েক জন কাউন্সিলর।

আলো সংক্রান্ত একটি দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করে মেয়রকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় দলের তরফে। মেয়রকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেওয়া হয়। বার্তা দেওয়া হয় চেয়ারম্যানকেও। দলের স্থানীয় সংগঠনের খোলনলচে বদলের নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরিবহণ, গ্যারাজ এবং গুদাম বিভাগের মেয়র পারিষদ নিত্যানন্দ দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আড়াই মাস আগে জয়দেব সিংহরায়কে সরিয়ে নিত্যানন্দবাবুকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জয়দেববাবুকেই ওই বিভাগে ফিরিয়ে আনা হয়। নিত্যানন্দবাবু ছিলেন ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান। তাঁকে ফের সেই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের গোষ্ঠী-রাজনীতিতে নিত্যানন্দবাবুর অবস্থান মেয়রের বিরোধী শিবিরে।

ওই বৈঠকে চন্দননগরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত, মন্ত্রী অসীমা পাত্র, বিধায়ক প্রবীর ঘোষালেরাও ছিলেন। ওই পুরসভায় ফের বিশৃঙ্খলা হলে আরও কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়।

বৈঠক প্রসঙ্গে মেয়র কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ জেলার অন্য নেতারাও মন্তব্য করেননি।

নিত্যানন্দবাবু বলেন, ‘‘দল যা দায়িত্ব দিয়েছিল, তা পালন করেছি। এখন যে দায়িত্ব দেওয়া হল, তাও সাধ্যমতো পালনের চেষ্টা করব।’’

চন্দননগর পুরসভায় ৩৩টি আসনের মধ্যে শাসকদলের হাতে রয়েছে ২৩টি। গোষ্ঠীকোন্দ‌লের জেরে সেখানে বারেবারেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে দলকে। তৃণমূল শিবিরের খবর, বোর্ড গঠনের কিছু দিন পর থেকেই কাউন্সিলরদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গড়ায় যে, কাউন্সিলররা আড়াআড়ি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন।

কয়েক মাস আগে ১৫ জন কাউন্সিলর দলেরই মেয়র এবং কয়েক জন মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে কার্যত ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন। পুরসভায় দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দলের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা হলেও সমস্যা মেটেনি। এ জন্য পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছিল বলেও অভিযোগ।

আড়াই মাস আগে এক কাউন্সিলরকে মারধরের অভিযোগ ওঠে এক মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। এর পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব কড়া অবস্থান নেন। মেয়রের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

কয়েক জন মেয়র পারিষদকে অপসারিত করা হয়। এর পরেও অবশ্য গোষ্ঠীকোন্দল থামেনি বলে তৃণমূল শিবিরের খবর। মেয়র পারিষদ পদে রদবদলে ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরদের অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন দফতর দেওয়া হয় বলে পুরসভার অন্দরে গুঞ্জন ওঠে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE