প্রতীকী ছবি
নামেই হোম কোয়রান্টিন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে হাওড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।
বিদেশ থেকে বা ভিন রাজ্য থেকে কেউ এলে তাঁকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে আসতে হচ্ছে। যদি তাঁর মধ্যে সন্দেহজনক কোনও উপসর্গ দেখা দেয়, তা হলে তাঁকে হাসপাতালের আইসলেশন ওয়ার্ডে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি তাঁর মধ্যে কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ না থাকে তাহলে তাঁকে বাড়িতে হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
হোম কোয়রান্টিনে ১৪ দিন থাকার সময়ে যদি তাঁর শরীরে সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে তাঁকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে যেতে বলা হয়। ১৪ দিনের মধ্যে যদি কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ না দেখা দেয় তাহলে তাঁর উপর কোনও বিধিনিষেধ থাকে না।
কিন্তু হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় সমস্যা দেখা দিয়েছে অনেক হোম কোয়রান্টিনে থাকা মানুষকে নিয়ে। নিয়ম হল, যিনি হোম কোয়রান্টিনে থাকবেন তিনি একটি ঘরে একা থাকবেন। তাঁর খাবারের জায়গা, হাত ধোওয়ার জায়গা হবে আলাদা। তিনি বাড়িতে কারও সঙ্গে মিশবেন না। বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। অভিযোগ, হোম কোয়রান্টিনে থাকা ব্যক্তিদের একটা বড় অংশ সেই নিয়ম মানছেন না। তাঁরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এর ফলে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরে বারবার ফোন করলে সেখান থেকে আশা কর্মীকে পাঠিয়ে হোম কোয়রান্টিনে থাকা ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি চলে গেলেই ফের ওই ব্যক্তি বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন।
মার্চ মাসের গোড়া থেকে এই জেলায় হোম কোয়রান্টিন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত মোট ৮৩৫ জনকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। তবে কোনও উপসর্গ না থাকায় ১৩০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ,যাঁরা হোম কোয়রান্টিনে আছেন তাঁদের মধ্যে সিংহভাগই বাইরে ঘোরাঘুরি করেছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ অবশ্য জানিয়েছেন, বিদেশ বা ভিন রাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের একাংশের ধারণা, যেহেতু বাড়ি ফেরার পরে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা করিয়ে কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ মেলেনি, তাই তাঁরা সুস্থ। সেই কারণেই তাঁরা নিয়মগুলি না মেনে বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন। একইসঙ্গে অবশ্য জেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই কর্তাদের দাবি, অভিযোগ পেলে পুলিশ দিয়ে তাঁদের বাড়ি ঢুকিয়েও দেওয়া হচ্ছে।
জেলার সমাজসচেতন কিছু মানুষের দাবি, ভিন রাজ্য থেকে যে সব মানুষ এসে ঘরে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন, তাঁদের অনেকেই গরিব। একা
থাকার মতো তাঁদের ঘর নেই। একটাই ঘরে ঘেঁষাঘেষি করে তাঁরা পরিবারের সবার সঙ্গে থাকতে বাধ্য হন। সেই কারণে তাঁরা সুযোগ পেলেই বাইরে বেরিয়ে আসেন। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানান, সরকারি হাসপাতালে কোয়রান্টিনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজন হলে যাঁরা নিয়ম মেনে হোম কোয়রান্টিনে থাকছেন না তাঁদের সেখানে রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy