টিএমসিপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অধ্যক্ষার
হুগলি উইমেন্স কলেজে বহিরাগত ঠেকাতে কঠোর হচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতৃত্ব। বুধবার ওই কলেজে গিয়ে সংগঠনের জেলা সভাপতি গোপাল রায় জানিয়ে দেন, সংগঠনের নাম করে কোনও ছাত্রী বা বহিরাগত কলেজে অশান্তি করলে টিএমসিপি দায় নেবে না।
৭০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন ঘিরে মঙ্গলবার ওই কলেজে বিশৃঙ্খলা হয়। অভিযোগ, টিএমসিপি-র কিছু ছাত্রী অনুষ্ঠান বানচালের চেষ্টা করেন।
তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে অনুষ্ঠান হচ্ছে, এই অভিযোগে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভে বহিরাগতরাও মদত দেন বলে অভিযোগ। গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ছাত্রীকে কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। গোলমাল হাতাহাতিতে গড়ায়। ওই ছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বচসা হয়। ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকারা রাস্তা অবরোধ করেন। শেষে রাস্তাতেই অনুষ্ঠান করা হয়। পরে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ করেন।
বুধবারেও কলেজে ওই ঘটনার রেশ ছিল। যে হলে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সাধারণ ছাত্রীদের একাংশ নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা শোনান। কার্যত তা প্রতিবাদ-সভায় পরিণত হয়। এক শিক্ষিকাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গত তিন বছর ধরেই এক দল ছাত্রীর হাতে তাঁদের হেনস্থা হতে হচ্ছে।’’
এ দিন টিএমসিপি জেলা সভাপতি অধ্যক্ষা সীমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। কলেজের একটি সূত্রের খবর, গোপালের কাছে টিএমসিপি-র একাধিক নেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সীমাদেবী। অধ্যক্ষা জানান, কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশ আটকানো যাচ্ছে না। কিছু মেয়ে রাত পর্যন্ত ছাত্রী সংসদের ঘরে আড্ডা দেন। এ দিন অবশ্য কলেজের তরফে ওই ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকের পরে অধ্যক্ষার পাশে দাঁড়িয়ে গোপাল বলেন, ‘‘এখানে টিএমসিপির ইউনিট নেই। তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বহিরাগত কেউ যাতে না ঢুকতে পারে, সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।’’ সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের জন্য টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি হন গোপাল। তাঁর সংযোজন, ‘‘এখনও জেলা কমিটি গঠিত হয়নি। কেউ নিজেকে টিএমসিপি-র পদাধিকারী বললে, তা ঠিক নয়। তার দায় আমরা নেব না। বিশৃঙ্খলা করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’
অধ্যক্ষা বলেন, ‘‘গোপালবাবুর কথায় আশ্বস্ত হয়েছি। বহিরাগতদের ঢোকা বন্ধ করতে ফের চেষ্টা করব। নির্বাচিত ছাত্রী সংসদ নেই বলেই আলোচনা করা হয়নি। দুই ছাত্রী প্রতিনিধির কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। ওঁরা তা নেয়নি। তখনই আঁচ করেছিলাম, সমস্যা হতে পারে। তা যে এই পর্যায়ের হবে, ভাবিনি।’’ পক্ষান্তরে, ছাত্রী প্রতিনিধি পুষ্পিতা দাস বলেন, ‘‘কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য অধ্যক্ষার সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। এমন ঘটনা আর যাতে না-ঘটে দেখব।’’
কলেজের প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (সদর) অরিন্দম বিশ্বাস জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে ঘটনার বিষয়ে জানালে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy