যে পুরসভার বাজেট বরাদ্দ হয় বছরে কয়েকশো কোটি টাকা, সেই পুরসভার কমিশনারের হাতে এত দিন অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা ছিল মাত্র ৫০০ টাকা! খোদ মেয়রের ছিল মাত্র ৫ লক্ষ টাকা আর মেয়র পারিষদদের বৈঠকে অর্থ অনুমোদনের সীমা ছিল মাত্র ২৫ লক্ষ টাকা।
৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এমনই চলছিল রাজ্যের অন্যতম বড় পুরসভা হাওড়া পুরনিগমে। কাজে গতি আনতে এত বছর পরে এ বার পুরকর্তাদের ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভার তৃণমূল বোর্ড। সোমবার পুরসভার মেয়র পারিষদ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অর্থ অনুমোদন-সহ কাজের ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার মডেলকে অনুসরণ করা হবে। সে জন্য প্রাথমিক ভাবে মেয়র, পুর কমিশনার-সহ মেয়র পরিষদে অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এরই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়েছে নানা শূন্যপদ পূরণ করার। কারণ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য চিফ ইঞ্জিনিয়ার, এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ। তা ছাড়া, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বহু অফিসার ও কর্মী অবসরও নেবেন। ফলে এই সব পদে নিয়োগের জন্য একটি তালিকা তৈরি করে পুর নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হবে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন থেকে পুর কমিশনারের ফাইল পিছু আর্থিক অনুমোদনের ক্ষমতা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ১০ লক্ষ টাকা করা হচ্ছে। মেয়রের পাঁচ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৫ লক্ষ ও মেয়র পারিষদ বৈঠকে অর্থ অনুমোদনের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ২৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ৫০ লক্ষ টাকা। পুরসভা সূত্রের খবর, রাস্তা তৈরি, পানীয় জল সরবরাহ, জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি নালা সাফাই-সহ পুর পরিষেবার বিভিন্ন কাজে বেশির ভাগ অনুমোদন ফাইলে সই করতে হত মেয়রকে। ফলে কোনও বেশি অঙ্কের ফাইল থাকলে, তা অনুমোদন পেতে দীর্ঘ সময় লাগত। ফলে কাজও শুরু করা যেত না। মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অর্থ অনুমোদনের ক্ষেত্রে এত কম টাকা নির্দিষ্ট থাকায় অত্যধিক চাপ হয়ে যাচ্ছিল। চায়ের টাকার অনিমোদনও দিতে হচ্ছিল মেয়রকে। তাই পুরমন্ত্রী ফিরাদ হাকিমের নির্দেশে গোটা পদ্ধতিটাই কলকাতা পুরসভার মডেলকে অনুসরণ করে করা হচ্ছে।’’
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০ বছর ধরে ওই পুরসভায় বামফন্ট্রের বোর্ডের দখলে থাকলেও পুর আইনের অধুনিকীকরণে তেমন উদ্যোগ দেখা যায়নি তাদের তরফে। বছর ১০ আগে তৎকালীন পুর কমিশনার দুর্গাদাস গোস্বামী এই চেষ্ঠা এক বার করেছিলেন। তিনিও পুর কর্তাদের আর্থিক অনুমোদনের ক্ষমতা বাড়াতে চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রচেষ্টা অনেকটা এগিয়ে গেলেও তৎকালীন পুর বোর্ড শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করেনি। হাওড়া পুসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘মেয়র পরিষদে পাশ হওয়া এই প্রস্তাব নিয়ে পুরসভার বৈঠকে (ওজি মিটিং)আলোচনা হবে। সেখানে অনুমোদন পেলে সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy