অনুদান: রাস্তায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র
সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরা খর্বকায় মানুষটা কাঁধে তোয়ালে ফেলে কাচের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই এলেন জুতোর দোকানের কর্মীরা। মানুষটি জানালেন, তিনি সিপিএমের সংগ্রাম আন্দোলন তহবিলে অর্থ সংগ্রহের জন্য এসেছেন। তাঁকে কাছে পেয়ে জিএসটি নিয়ে কথা বলে নিলেন হুগলির শ্রীরামপুরের বি পি দে স্ট্রিটের ওই জুতোর দোকানের কর্মীরা। তার পরে তহবিলে ৫০ টাকার একটি নোট দিলেন।
তিনি সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বিমান বসু। শনিবার বিকেলে শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন বাজার এলাকায় দোকানে দোকানে ঘুরে তহবিল সংগ্রহ করলেন তিনি। কোনও দোকানদারকে টাকা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দিলেন। কখনও কলেজ পড়ুয়া তরুণীর মাথায় রাখলেন স্নেহের হাত। আবার রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে মোবাইলে ছবি তুলতে দেখে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রসিকতা করে বলে উঠলেন, ‘‘ধুর শুধু ছবি তুললে হবে না। আমাদের তহবিলে টাকা দিন।’’ কখনও আবার সংগঠনের কর্মীদের ঈষৎ ধমক দিতেও ছাড়েননি। ব্যস্ত রাস্তায় তখন যানজট।
তৃণমূলের ভরা বাজারে এমনটা দেখে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা তখন রীতিমতো উজ্জীবিত। অনেকে বলেই ফেললেন, ‘‘এতটা সাড়া পড়বে আশা করিনি।’’ শঙ্কর দেবনাথ নামে এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘বিমানবাবু নিজে এসেছেন। হাসিমুখে টাকা দিয়েছি।’’ বিমানবাবু বলেন, ‘‘ভালই তো সাড়া মিলল। ঠিকই আছে।’’
এ দিন থেকে সিপিএমের ‘সংগ্রাম ও আন্দোলন তহবিলে জেলাব্যপী অর্থ সংগ্রহ অভিযান’ চালু হল। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। সকালে চুঁচুড়ার আখনবাজারে সভা এবং রাস্তায় নেমে অর্থ সংগ্রহ করে অভিযান শুরু করেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সূর্যবাবু এবং বিমানবাবু দু’জনেই কেন্দ্রীয় সরকারের জিএসটি চালুর বিরোধিতা করেন। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যা করলেন, তাতে দেশজুড়ে নৈরাজ্যের আশঙ্কা তৈরি হল। জিএসটি-র ফলে পুঁজিপতি ব্যবসায়ীরা অনেক ছাড় পাবেন। মানুষের যে ছাড় পাওয়ার কথা ছিল তা, ওই পুঁজিপতিরা লুঠ করে নেবেন। এর প্রতিবাদ করতে হবে।’’ পুজোর আগে বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক দফতরে এবং নবান্ন অভিযানের হুমকি দেন তিনি।
বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘জিএসটির প্রভাব তো মানুষের উপর পড়বেই। ট্যাক্স বসলে সামগ্রীর দাম বাড়বে। কয়েক দিন গেলেই মানুষ সব বুঝতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy