Advertisement
০৫ মে ২০২৪
jagadhatri Puja

চন্দননগরে প্রতিমার পক্ষেই বেশি ‘ভোট’

সবই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে। মাস্ক না-পরে মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ। মণ্ডপ প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাহুল্যবর্জিত আয়োজনের জন্য বিশেষ জয়ন্তী পালনকারী পুজোগুলি তেমন আড়ম্বর করতে পারবে না।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪৮
Share: Save:

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর

জল্পনা তৈরি হয়েছিল, চিরাচরিত প্রতিমার পরিবর্তে এ বার ঘটপুজো হবে কিনা, তা নিয়ে। জনজীবন যে ভাবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে, তা বিবেচনা করে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই সেই ভাবনা থেকে সরে এসেছেন।যাঁরা চাইবেন, তাঁরা মণ্ডপে চিরাচরিত আকৃতির প্রতিমা পুজো করতে পারবেন। অন্যথায় ঘটপুজো। রবিবার চন্দননগর কেন্দ্রীয় জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটির বিশেষ সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ যাতে না-ছড়ায়, সে জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজনের কথা বলা হয়েছে।

কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ সাউ বলেন, ‘‘পুজোর ঐতিহ্য, মানুষের ভাবাবেগের সঙ্গে বহু মানুষের রুজিরুটির প্রশ্নও জড়িয়ে। লকডাউনে থমকে যাওয়া অর্থনীতির চাকা এখন সচল করার সময়। তাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যতটা সম্ভব আয়োজনের দরকার বলে আমাদের মনে হয়েছে। সবটাই পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে করা হবে।’’ গত ২৩ অগস্ট কেন্দ্রীয় কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা হয়। সেখানে কমিটির অন্তর্ভুক্ত ১৭১টি পুজো কমিটির থেকে আয়োজন নিয়ে লিখিত মতামত চাওয়া হয়েছিল। কমিটি সূত্রের খবর, ১৬৪টি পুজো কমিটি মতামত জানিয়েছে। ১১৯টি কমিটি জানায়, তারা চায় চিরাচরিত উচ্চতাবিশিষ্ট প্রতিমা হোক। ৩৩টি কমিটি ঘটপুজোর পক্ষে মত দেয়। ১২টি কমিটি বিকল্প ভাবনার কথা জানায়।

ওই বিষয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে রবিবারের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যে সব পুজো কমিটি প্রতিমা পুজোর আয়োজনে ইচ্ছুক, তারা স্থায়ী কাঠামোয় প্রতিমা নির্মাণ করবে। এ নিয়ে মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। যারা ‘স্বাভাবিক’ উচ্চতার প্রতিমা তৈরিতে অনিচ্ছুক, তারা স্থায়ী কাঠামোয় দেবীর প্রতিচ্ছবির ফ্লেক্স রেখে ঘটপুজো করবে। চিরাচরিত আকারের চেয়ে ছোট প্রতিমা করা হবে না। তিন দিক যথাসম্ভব খোলা এবং বড় পরিসরযুক্ত মণ্ডপ তৈরি করতে হবে। এই বিষয়ে ডেকরেটরদের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পুজো থেকে প্রতিমা দর্শন— সবই স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে হবে। মাস্ক না-পরে মণ্ডপে প্রবেশ নিষেধ। মণ্ডপ প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বাহুল্যবর্জিত আয়োজনের জন্য বিশেষ জয়ন্তী পালনকারী পুজোগুলি তেমন আড়ম্বর করতে পারবে না। আগামী বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে তারা বিশেষ আয়োজন করতে পারবে। বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ে আলোচনা হলেও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। একটি পুজো কমিটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘শোভাযাত্রা এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অসংখ্য মানুষ দেখতে আসেন। পুজোর দু’মাস বাকি। পরিস্থিতি বুঝে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে শোভাযাত্রার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’’

কমিটির কর্তাদের বক্তব্য, করোনা বাগে না এলেও সুস্থতার হার বাড়ছে। মৃত্যুর হারও বেশি নয়। জনজীবন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর কথা বলছে সরকার। জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করে চন্দননগরে বিপুল টাকার লেনদেন হয়। মৃৎশিল্পী, সাজসজ্জাশিল্পী, আলোকশিল্পী, ডেকরেটর, সাউন্ড-বক্স ব্যবসায়ী, ঢাকি, দশকর্মা ব্যবসায়ী, পুরোহিত, ফল-ফুল ব্যবসায়ী, খাবারের দোকানি, পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত লোক-সহ নানা পেশার মা‌নুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। পুজো হলে মন্দার বাজারে অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চার হবে। আলোচনায় এই দিকটিই প্রাধান্য পেয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid19 pandemic Puja Jagadhatri Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE