Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
হাওড়ায় দুর্ভোগ,
Coronavirus

বাস কম, পাদানিতে ঝুলেই অফিসের পথে

পর্যাপ্ত বাসের অভাবে সোমবার হাওড়া জেলার অফিসযাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ল।

ভোগান্তি: সোমবার নিমদিঘিতে বাস ধরার জন্য ঠেলাঠেলি। ছবি: সুব্রত জানা

ভোগান্তি: সোমবার নিমদিঘিতে বাস ধরার জন্য ঠেলাঠেলি। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ০৪:৫৩
Share: Save:

আশঙ্কাই সত্যি হল।

পর্যাপ্ত বাসের অভাবে সোমবার হাওড়া জেলার অফিসযাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ল। মুম্বই রোড ধরে বাসের মাথায় চেপে, পাদানিতে ঝুলতে ঝুলতে অফিস গেলেন বহু মানুষ।

‘‘পেটের দায়, বুঝলেন। না হলে কী এ ভাবে ঝুঁকি নিয়ে বেরোই! করোনা থেকে বাঁচতে ঘরে থাকার উপায় নেই। অফিস থেকে যেতে চাপ দিচ্ছে। অথচ, দিন দিন রাস্তায় বাস কমছে। জানি না কপালে কী আছে!’’— আক্ষেপ এক বাসযাত্রীর।

অফিসযাত্রীরা বাস্তবিকই উভয়সঙ্কটে। বাস কম থাকায় দূরত্ব-বিধি শিকেয় উঠেছে। ভিড় বাসে গরম থেকে বাঁচতে বহু যাত্রীই মুখে বেশিক্ষণ মাস্ক রাখতে পারছেন না। ঘেমেনেয়ে একসা হচ্ছেন। তবু অফিস তো যেতেই হবে! যাত্রীদের অভিযোগ, করোনা আবহের মধ্যে গণ পরিবহণ ব্যবস্থা সামাল দিতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ।

ডিজেলের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। তার উপরে ভাড়াবৃদ্ধি নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকায় বেসরকারি বাসের মালিকদের ক্ষতির বোঝা দিন দিন বাড়ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় সোমবার হাওড়ার রাস্তায় আরও বাস কমল। অথচ, অফিসযাত্রীদের ভিড় দিন দিন বাড়ছে।

গ্রামীণ হাওড়ার অফিসযাত্রীরা সাধারণত ভরসা করেন দুই মেদিনীপুর থেকে কলকাতা এবং হাওড়া শহরে যাওয়া দূরপাল্লার বেসরকারি বাসের উপরে। এই বাসগুলিই এ দম কম চলে। ফলে, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দূরপাল্লার বাসে ভিড় হয়। দুই মেদিনীপুর থেকে কিছু বাস ‘রিজ়ার্ভ’ হিসেবে কলকাতা ও হাওড়া যায়। অনেক বেশি ভাড়ায়। তাতেও ওঠার জন্য যাত্রীদের হুড়োহুড়ি পড়ে। তবে, জেলার বিভিন্ন রুটে যে সব বাস চলে তার সংখ্যা এ দিন তেমন কমেনি।

গণ-পরিবহণের এই সঙ্কটেও জেলায় সরকারি সিটিসি বাস এখনও চালু হয়নি। জেলার গ্রামীণ এলাকায় চারটি রুটে (ধর্মতলা- বাগনান, ধর্মতলা-গাদিয়াড়া, ধর্মতলা-আমতা ও ধর্মতলা-উদয়নারায়ণপুর) সিটিসি বাস চলে। যাত্রীদের প্রশ্ন, সরকার বেসরকারি বাস চালাতে নানা ভাবে চাপ দিচ্ছে, কিন্তু নিজেরা সিটিসি বাস চালাচ্ছে না কেন?

সিটিসি-র এক কর্তা জানান, পরিযায়ী শ্রমিকদের আনা, তাঁদের নিভৃতবাস কেন্দ্রে পৌছে দেওয়া-সহ নানা কাজে সিটিসি বাসকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তাই সেগুলি রুটে নামছে না।

কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের আসা কমে গিয়েছে। গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে অনেক প্রাতিষ্ঠানিক নিভৃতবাস কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও এখনও সিটিসি বাস চলছে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর সিটিসি কর্তাদের কাছ থেকে মেলেনি।

ভাড়াবৃদ্ধি নিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত না-নেওয়া পর্যন্ত দুর্ভোগ কমবে না, ধরেই নিয়েছেন অফিসযাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE