প্রতীকী ছবি।
বোর্ড গঠনের পরে দু’সপ্তাহ পেরোয়নি। তার মধ্যেই ডামাডোল শুরু হয়েছে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রিষড়া পঞ্চায়েতে। দিন কয়েক আগে প্রশাসনের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য নির্বাচিত উপপ্রধান আজিজুল হক। এ বার একই পথ হাঁটলেন প্রধান লিপিকা ঢালি বর্মন।
ঘটনায় চাপান-উতোর শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। বিরোধী এবং তৃণমূলের একাংশের দাবি, বোর্ড গঠনের পর থেকেই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর তরফে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। লিপিকাদেবী অবশ্য জানিয়েছেন, অসুস্থতার কারণেই তিনি ওই পদ থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়াতে চাইছেন।
রিষড়া পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ২৮। তৃণমূলের হাতে রয়েছে ১৯টি আসন। পাঁচটি কংগ্রেস, তিনটি বিজেপি এবং একটি সিপিএমের দখলে। গত ২৩ অগস্ট বোর্ড গঠন হয়েছিল। তৃণমূলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও ভোটাভুটির সময় হিসেব উল্টে যায়। প্রধান পদে দলের ঠিক করা সদস্যের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃণমূলেরই একটি অংশ। বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের সমর্থনে তাঁরাই বোর্ড গঠন করেন। ভোটাভুটিতে জিতে প্রধান হন লিপিকাদেবী।
ঘটনাটি ভাল ভাবে নেয়নি দল। প্রধান ঠিক করা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সিপিএম এবং বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান ঠিক করার অভিযোগে সরিয়ে দেওয়া হয় দলের ব্লক সভাপতি নিখিল চক্রবর্তীকে। তার জায়গায় বিজন মণ্ডলকে ব্লক সভাপতি ঘোষণা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এর পরেই উপপ্রধান আজিজুল পদত্যাগপত্র জমা দেন।
মঙ্গলবার দুপুরে লিপিকা বিডিও অফিসে আসেন। বিজনবাবু এবং শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহের উপস্থিতিতে বিডিও তমালবরণ ডাকুয়ার হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন তিনি। পরে লিপিকাদেবী বলেন, ‘‘শরীর অসুস্থ বলেই ইস্তফা দিচ্ছি। দলের কোনও চাপ নেই।’’ বোর্ড গঠনের পরে দলের অন্দরে বিতর্ক, ব্লক সভাপতির অপসারণ, উপপ্রধানের ইস্তফা এবং তাঁর নিজের ইস্তফা— এই ঘটনাক্রম কি স্বাভাবিক? জবাব দেননি লিপিকাদেবী।
তা মানতে নারাজ পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য ঝন্টু বাকুলি থেকে স্থানীয় কংগ্রেস নেতা শেখ রশিদ, সাবির আলিরা। তাঁদের দাবি, ‘‘তৃণমূলে একাধিক গোষ্ঠী। পদত্যাগ চাপের কারণেই, অন্য কিছু নয়।’’ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিজন মণ্ডল অবশ্য বলছেন, ‘‘উনি ব্যক্তিগত কারণেই ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন।’’
ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, উপপ্রধানের ইস্তফাপত্র নিয়ে তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। আগামী ১০ অগস্ট শুনানি। প্রধানের পদত্যাগপত্র নিয়েও পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। তিন দিনের মধ্যে নোটিস পাঠিয়ে তাঁকে বিডিও দফতরে ব্যক্তিগত হাজিরা দিতে বলা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy