Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
আনন্দের উৎসবে দূষণ নিয়ে বাড়ছে সচেতনতা

ডিজে-র বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেন ডাক্তার, শিক্ষক

সম্প্রতি ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা কথা বলেন। তার ভিত্তিতেই এ দিনের কর্মসূচি ঠিক হয়। শিবিরে এডিসিপি (ট্র্যাফিক) হরিকৃষ্ণ হালদার, বিশিষ্ট নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বিমলকান্তি রায়ও উপস্থিত ছিলেন।

বার্তা: ঘড়ির মোড়ে শব্দদূষণ বিরোধী প্রচার পুলিশের তরফে। —নিজস্ব িচত্র

বার্তা: ঘড়ির মোড়ে শব্দদূষণ বিরোধী প্রচার পুলিশের তরফে। —নিজস্ব িচত্র

প্রকাশ পাল 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩৯
Share: Save:

ডিজে বক্স বাজানো, শব্দবাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। তবু উৎসব থেকে পারিবারিক অনুষ্ঠান— সব ক্ষেত্রেই ডিজের বাড়বাড়ন্তে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। বহু বছর ধরে এই সব শব্দ-দৈত্যের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে হুগলি জেলার এক শ্রেণির মানুষ আন্দোলন করছেন। বুধবার, দুর্গাপুজোর চতুর্থীতে আরও একবার তাঁরা পথে নামলেন।

চন্দননগর পুলিশের কমিশনারেটের উদ্যোগে এ দিন চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে ডিজে ব‌ন্ধে সচেতনতা শিবির হল। সহযোগিতায় ছিল একটি বিজ্ঞান সংস্থা এবং হুগলি জেলা নাগরিক মঞ্চ। স্কুলপড়ুয়া থেকে গৃহবধূ, আইনজীবী থেকে চিকিৎসক, শিক্ষিকা থেকে পুলিশকর্মী— সকলেই উপস্থিত ছিলেন। তাঁর ডিজে, শব্দবাজি, জোরে গাড়ির হর্নের বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ করেন। এ সব বন্ধের আর্জি জানান। বিজ্ঞান সংস্থার তরফে চুঁচুড়া থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। চুঁচুড়া-চন্দননগরে পোস্টার সাঁটা হয়। পুলিশের তরফেও ফ্লেক্স লাগানো হয়। লিফলেট বিলি করা হয়।

ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পুজো-উদ্যোক্তাদের ডিজে বাজানোর নিষেধাজ্ঞার কথা লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদেরও ডিজে বক্স ভাড়া না-দিতে আবেদন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা মানা না-হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। অভিযান চালিয়ে ডিজে বক্স বাজেয়াপ্ত করা হবে। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘ডিজে এবং শব্দবাজি সারা বছরের সমস্যা। এর দৌরাত্ম্য পুরোপুরি বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে। সারা বছর এ ধরনের সচেতনতা শিবির করা হবে।’’

সম্প্রতি ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা কথা বলেন। তার ভিত্তিতেই এ দিনের কর্মসূচি ঠিক হয়। শিবিরে এডিসিপি (ট্র্যাফিক) হরিকৃষ্ণ হালদার, বিশিষ্ট নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বিমলকান্তি রায়ও উপস্থিত ছিলেন। চুঁচুড়ার বাসিন্দা বিমলকান্তিবাবু বলেন, ‘‘ডিজে, শব্দবাজি, গাড়ির অতিরিক্ত জোরে হর্ন বিশেষত বয়স্কদের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। কেউ পুরোপুরি বধির হয়ে যেতে পারেন। মানসিক অসুখ হতে পারে। হৃদরোগীদের পক্ষেও এই শব্দ অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে প্রাণহানিরও আশঙ্কা থাকে।’’ ওই চিকিৎসক মনে করেন, শুধু পুলিশের পক্ষে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। যত বেশি সম্ভব সচেতনতা শিবির করে মানুষকে বোঝাতে হবে।

কমিশনারেটের কর্তাদেরও বক্তব্য, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়েই তাঁরা ডিজে এবং শব্দবাজি নামক অসুরের বিরুদ্ধে লড়তে চান। ফি-বছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুমতি দেওয়ার সময় পুলিশ-প্রশাসনের তরফে ডিজে না-বাজানোর নির্দেশ লিখিত দেওয়া হয়। কিন্তু অনেকেই তা মানেন না। অনুষ্ঠান বাড়িতে মাঝরাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটা দস্তুর। অতিষ্ঠ হলেও অনেকে প্রতিবাদের সাহস পান না। থানায় জানালেও বহু ক্ষেত্রেই কাজ হয় না বলে অভিযোগ।

এখন নানা স্তর থেকে আওয়াজ উঠলেও ডিজে-ভক্তরা কতটা সচেতন হচ্ছেন, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sound Pollition Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE