Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টি, বিপর্যস্ত জনজীবন

পূর্বাভাস ছিলই। রবিবার মাঝরাত থেকে প্রব‌ল ঝড়বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হল দুই জেলার জনজীবন। গাছ ভেঙে পড়ায় বিঘ্নিত হয় ট্রেন চলাচল, অবরুদ্ধ হয় রাস্তা। হুগলিতে জখম হলেন দু’জন।

ভোগান্তি: গাছ ভেঙে রাস্তা বন্ধ উলুবেড়িয়া এসডিও অফিসের সামনে নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: গাছ ভেঙে রাস্তা বন্ধ উলুবেড়িয়া এসডিও অফিসের সামনে নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
চুঁচুড়া ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩১
Share: Save:

পূর্বাভাস ছিলই। রবিবার মাঝরাত থেকে প্রব‌ল ঝড়বৃষ্টির জেরে বিপর্যস্ত হল দুই জেলার জনজীবন। গাছ ভেঙে পড়ায় বিঘ্নিত হয় ট্রেন চলাচল, অবরুদ্ধ হয় রাস্তা। হুগলিতে জখম হলেন দু’জন।

সোমবার ভোরে উত্তরপাড়া স্টেশনে ঝড়ে রেলের ওভারহেড তারে গাছ পড়ে যায়। তাতে সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। সকালে শেওড়াফুলিতে লেভে‌ল ক্রসিংয়ে একটি ট্রাক বিকল হয়ে পড়ায় তিন জোড়া লোকাল ট্রেন বাতিল হয়। দমদম স্টেশনে ওভারহেড তারে গাছ পড়ায় শিয়ালদহ-ডানকুনি শাখাতেও ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানান, সকাল সাতটার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের উলুবেড়িয়া স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের টিনের চাল উড়ে যায়।

ডানকুনিতে রবিবার মাঝরাতেই একটি নির্মীয়মাণ আবাসনের পাঁচিল ভেঙে লাগোয়া মিষ্টির দোকানের রান্নাঘরে পড়লে সেখানকার দুই কর্মচারী জখম হন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩১ এবং ১২ নম্বর রুটে কয়েকটি জায়গায় রাস্তায় গাছ এবং বাঁশের তোরণ ভেঙে পড়ায় যান‌ চলাচ‌ল বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টিতে আরামবাগ শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি নালা উপচে নোংরা জল রাস্তায় চলে আসে। পোলবার মহানাদ, সুদর্শন গ্রামে রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পোলবা গ্রামীণ হাসপাতালও বিদ্যুৎহীন হয়ে পরে। জেনারেটর চালিয়ে পরিষেবা দেওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সকাল গড়িয়ে যায়। শ্রীরামপুরের জিতেন্দ্রনাথ লাহিড়ী রোডের একটি কারখানার চিমনি ঝড়ে ভেঙে যায়। হাওড়ার বাগনান, শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া-সহ কয়েকটি এলাকায় তারে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উলুবেড়িয়া মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে ঝড়ে গাছ পড়ে বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দুপুর গড়িয়ে যায়।

ঝড়বৃষ্টিতে দুই জেলাতেই আলু বাদে অন্য ফসলের ক্ষেত্রে লাভ হয়েছে বলে মনে করছেন দুই জেলার কৃষি আধিকারিকরাই। তাঁরা জানিয়েছেন, আনাজ, বাদাম, বোরো চাষে বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। এতে তিল চাষের জন্য জমি কর্ষণেও সুবিধা হবে। হাসি ফুটেছে বোরো চাষিদের মুখেও। কারণ, ডিভিসি জানিয়েছে, এই মরসুমে বোরো চাষে তারা জল দিতে পারবে না।

এখন আলু তোলা চলছে পুরোদমে। এ বার বাড়তি ফলন নিয়ে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে সব মহল। ঝড়বৃষ্টিতে আলুতে ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতর এবং চাষিদের একাংশ। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা-১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে সাড়ে চারশো হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। ৮০% আলু তুলে নেওয়া হয়েছে। যেটুকু পড়ে আছে, তার কিছুটা পচে যেতে পারে বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর। অবশ্য কেউ কেউ মনে করছেন, ক্ষতি ততটা হবে না। তাঁদের মতে, দীর্ঘদিন বৃষ্টি হয়নি. মাটিতে জলের টান রয়েছে। বৃষ্টির জল আলুর ক্ষতি করবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Storm Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE