Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হাওড়ার হেলে পড়া বাড়ি ভাঙা হয়নি আজও

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রোমোটারকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বেআইনি এবং বিপজ্জনক ওই বাড়ি ভাঙার পুরো টাকা না দিলে তখন আর কোনও রাস্তা থাকবে না।

বিপজ্জনক: এমনই অবস্থায় রয়েছে বাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

বিপজ্জনক: এমনই অবস্থায় রয়েছে বাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০২:৪১
Share: Save:

বাড়ি ভাঙার টাকা দেননি প্রোমোটারেরা। তাই এখনও ঠিক ভাবে শুরুই হল না হাওড়ার বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়া ফ্ল্যাটবাড়ি ভেঙে ফেলার কাজ।

সেই কারণে বিপদ মাথায় নিয়েই থাকতে হচ্ছে প্রতিবেশীদের। হাওড়ার সালকিয়ার ত্রিপুরা রায় লেনে নির্মীয়মাণ ওই পাঁচতলা বাড়ির একতলাটি মাটিতে বসে গিয়ে গোটা বাড়ি হেলে পড়েছিল দিন পনেরো আগে। ফেটে গিয়েছিল বাড়িটির ছাদ ও কংক্রিটের স্তম্ভ। বাড়িটি যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে আশপাশের তিনটি বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র গিয়ে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত ১২ মে সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, নিজেদের সুরক্ষার জন্যই আগামী ১৫ দিন ওই হেলে পড়া বাড়ি সংলগ্ন অন্য বাড়িগুলির বাসিন্দাদের অন্য কোথাও গিয়ে থাকতে হবে। কিন্তু ১৫ দিন পরেও বাড়ি ভাঙার কাজ পুরোদমে শুরু না হওয়ায় আতঙ্ক বেড়েছে আশপাশের বাসিন্দাদের। তাঁদের প্রশ্ন, পুরসভা নোটিস দিয়ে ১৫ দিন বাইরে থাকতে বলার পরেও হেলে পড়া বাড়ি ভাঙার কাজ ঠিক মতো শুরু হল না কেন?

হাওড়া পুরসভার কমিশনার তথা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘বাড়িটি ভাঙার জন্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। সেই টাকা বাড়ির প্রোমোটারদের দেওয়ার কথা। কিন্তু তাঁদের এত দিন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে সোমবারই এক জন প্রোমোটার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি টাকা দিতেও রাজি হয়েছেন।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রোমোটারকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বেআইনি এবং বিপজ্জনক ওই বাড়ি ভাঙার পুরো টাকা না দিলে তখন আর কোনও রাস্তা থাকবে না। পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করবে। পুর কমিশনার জানান, বাড়িটি যে বেসরকারি সংস্থাকে ভাঙার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা ঠিক করেছে, পিলারে লোহার জয়েস্ট লাগিয়ে তার পরে ভাঙার কাজ শুরু হবে।

এ দিকে, ঘটনার ১৫ দিন পরেও আতঙ্ক কাটছে না পাশের তিনটি বাড়ির বাসিন্দাদের। ভেঙে পড়া বেআইনি বাড়িটির ঠিক পাশের বাড়িতেই থাকেন ষাটোর্ধ্ব প্রকাশ মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী শঙ্করী মণ্ডল। বিপদের আশঙ্কা নিয়েই তাঁরা রয়ে গিয়েছেন নিজেদের বাড়িতে। এ দিন শঙ্করীদেবী বলেন, ‘‘আর কত দিন সময় লাগবে বলুন তো? পুরসভা কি নিজে টাকা দিয়ে ভেঙে দিতে পারত না? একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেলে পুরসভা দায় এড়াতে পারবে?’’ ওই বৃদ্ধা জানান, তিনি টিভিতে দেখেছেন, বাঁকুড়ার দিকে ভূমিকম্প হয়েছে।

তার পর থেকে ঘুমোতে পারেননি সারা রাত। কারণ, তাঁর অভিযোগ,

বাড়িটা ক্রমশ হেলে পড়ছে তাঁদের বাড়ির দিকেই।

স্ত্রী-পুত্র নিয়ে ওই হেলে পড়া বাড়ির ঠিক পাশেই থাকেন সুজিত দাস। তাঁরও প্রশ্ন, ‘‘একটা বাড়ি ভাঙতে এত দেরি হবে কেন? আমাদের ক্ষতি হলে, প্রাণ গেলে পুরসভা কি ফিরিয়ে দিতে পারবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Building
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE