শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতন চালিয়ে এক মহিলাকে খুনের অভিযোগ উঠল। শনিবার রাতে কোন্নগরের চণ্ডীচরণ ঘোষাল লেনের বাসিন্দা পল্লবী মিত্র (৩৮) নামে ওই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহটি ঘরের মেঝেতে শোয়ানো অবস্থায় ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পল্লবীর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার বিকেলে পুলিশ তাঁর স্বামী সুজয় এবং শ্বশুর অশোকবাবু এবং শাশুড়ি ভারতীদেবীকে গ্রেফতার করেছে।
এক তদন্তকারী জানান, সুজয় যে স্ত্রীর উপরে নির্যাতন করত, অনেকেই সে কথা জানিয়েছেন। সংসার করার স্বার্থে ওই বধূ তা সহ্য করতেন। ঠিক কী কারণে তাঁর মৃত্যু হল, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই পরিষ্কার বোঝা যাবে।’’ আজ, সোমবার ধৃতদের আদলতে তোলা হবে। দম্পতির একমাত্র ছেলে প্রীতম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। পুলিশকে সে জানিয়েছে, বাবা প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় মায়ের গায়ে হাত তুলত। শনিবার সন্ধ্যাতেও মারধর করে। রাতে সে রুটি কিনতে যায়। ফিরে এসে ঘরে মায়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পল্লবীর বাপের বাড়ি শ্রীরামপুরের তারাপুকুর গভর্নমেন্ট কোয়ার্টার এলাকায়। বছর বারো আগে সুজয়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সুজয়রা আগে কোন্নগরেরই ঘোষপাড়ায় থাকতেন। পরে চণ্ডীচরণ ঘোষাল লেনে বাড়ি করেন। এক সময় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে ঋণ বিভাগে কাজ করতেন সুজয়। কয়েক বছর আগে সেই কাজ ছেড়ে দেন। তারপর থেকে আর তেমন কিছু করছিলেন না। পল্লবী পুরসভার অধীনে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছিলেন।
মৃতার বাবা পুলক দত্ত জানান, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ নাতি প্রীতম তাঁদের ফোন করে। ফোনে পূজার এক পড়শি জানান, মেয়ের হৃদস্পন্দন পাওয়া যাচ্ছে না। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁরা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখেন, দোতলার ঘরে মেঝেতে পল্লবীর মৃতদেহ পড়ে। পুলকবাবু বলেন, ‘‘ওরা বলছে, মেয়ে নাকি গলায় দড়ি দিয়েছে! শাশুড়ি নাকি মেয়ের দেহ দড়ি কেটে নামিয়েছে! জামাই ঘরে থাকতে এক জন বয়স্ক মহিলা মেয়ের দেহ নামালেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য?’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘নিজেদের বাঁচাতে ওঁরা মিথ্যা বলছেন। মেয়েকে অত্যাচার করে ওঁরা মেরে ফেলেছেন। মেয়ের গায়ে রক্তের দাগ ছিল।’’
চন্দননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, ঘটনার খবর পেয়ে কোন্নগর ফাঁড়ির পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। তদন্তকারীর মনে করছেন, তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। পুলকবাবুই উত্তরপাড়া থানায় জামাই-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে খুন এবং বধূ নির্যাতনের ধারায় মামলা রুজু হয়। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পল্লবীর দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy