বেলাগাম: গভীর রােত এই এলাকাতেই ঘটেছিলে দুর্ঘটনা। পরদিন সকালেও সেখানে নেই কোনও নজরদারি। সিগন্যাল ভেঙে রাস্তা পেরোতে চেষ্টা করছেন হেলমেটহীন বাইক আরোহীরা। ছবি: দীপঙ্কর দে।
মোটর বাইক নিয়ে রাস্তা পেরতে গিয়ে ট্রাকের চাকায় পিষে গেলেন তিন যুবক। বুধবার রাতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর ডানকুনি এলাকার ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনেরই। পুলিশের দাবি, বাইকটি ট্রাফিক সিগন্যাল লঙ্ঘন করাতেই ওই ঘটনা।
মৃতদের নাম রবি কুমার (২৫), রাজ কুমার (২৩) এবং জয় প্রকাশ (২৪)। রবি এবং রাজ দুই ভাই। তাঁদের বাড়ি হরিয়ানায়। পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রাজ-রবি ডানকুনিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। রাজস্থানের বাসিন্দা জয় ছিলেন তাঁদের কর্মচারী। ওই বাড়িতে থাকতেন তিনিও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ তিন যুবক একটি মোটরবাইকে চেপে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে নিচ ডানকুনির একটি হোটেলে খেতে যাচ্ছিলেন। নিচ ডানকুনি ক্রসিংয় এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় কলকাতামুখী লেনে একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁদের। তিন জনেরই শরীরের নিম্নাংশ ট্রাকের চাকায় পিষে যায়। বেগতিক বুঝে ট্রাকটি চম্পট দেয়। ঘটনাস্থলেই রবির মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে ডানকুনি থানার পুলিশ এসে অন্য দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। কিন্তু পথেই দু’জনের মৃত্যু ।
রবি কুমার ও জয় প্রকাশ ও রাজ কুমার
চন্দননগর কমিশনারেটের তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, বাইকটি লাল সিগন্যাল উপেক্ষা করে রাস্তা পেরনোর চেষ্টা করছিল। তিন যুবকের মাথায় হেলমেটও ছিল না। এমনকি প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ তিনজনই নেশাগ্রস্ত ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ট্রাকটি আটক করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কমিশনারেটের কর্তারা আইন লঙ্ঘন করাকেই দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মনে করছেন। কিন্তু দ্রুতগামী ওই রাস্তায় পুলিশি নজরদারির অভাবের প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এমনকি ওই রাস্তায় যাঁরা নিয়মিত গাড়ি চালান তাঁদের অনেকেই বলছেন, প্রতিদিনই ওই রাস্তায় হেলমেটহীন বাইক আরোহীরা দ্রুত গতিতে যাতায়াত করেন। পুলিশের নজরদারি চোখে পড়ে না। বৃহস্পতিবারও ওই ক্রসিং-সহ রাস্তার নানা জায়গায় নিয়ম ভেঙে বাইক নিয়ম ভেঙে চলতে দেখা গেল।
নিচ ডানকুনি এলাকার এক হোটেল-ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচার চালানো হয়। পুলিশের বড় অফিসাররা আসেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই। সে ভাবে নজরদারি কোথায়!’’
বেলাগাম: চলন্ত ম্যাটাডরের দরজা খুলে চলছে কেরামতি। বৃহস্পতিবার দুপুরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর।ছবি: দীপঙ্কর দে
নজরদারির অভাবের কথা অবশ্য কমিশনারেটের আধিকারিকরা মানেননি। এডিসিপি (ট্রাফিক) মৃণালকান্তি মজুমদার বলেন, ‘‘ডানকুনিতে ট্রাফিক সচেতনতা নিয়ে অনেক কর্ম সূচি নেওয়া হয়। আইন ভেঙে চলা বাইক বা অন্য গাড়ি ধরা, জরিমানা— সবই করা হয়। সচেতনতাও বেড়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ যে এখনও সচেতন হননি, এটা দুঃখজনক। তবে, সচেতনতা আরও বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’’
পুলিশকর্তাদের বক্তব্য, এক্সপ্রেসওয়ের উপর বিশেষত রাতে গাড়ি ধরতে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তবে বিভিন্ন মোড়ে তা করা হয়। রাস্তায়
টহলদারিও চলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy