Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাজা হত্যা-মামলায় ধৃত তৃণমূল‌ নেতা জেল হাজতে

রেল পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যেই পিন্টুবাবুকে মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁকে আর হেফাজতে চাওয়া হয়নি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০১:০৪
Share: Save:

ফুটবলার স্নেহাশিস দাশগুপ্ত ওরফে রাজার মৃত্যু মামলায় অভিযুক্ত শ্রীরামপুরের তৃণমূল নেতা পিন্টু নাগের ১৪ দিন জেল হাজত হ‌ল।

স্নেহাশিসকে খুন এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পিন্টুবাবু এবং তাঁর দুই অনুগামী প্রতাপ মণ্ডল ও কালীরঞ্জন দাসকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। ধৃতদের বুধবার শ্রীরামপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম রোহিনী রাইয়ের এজলাসে তোলা হয়। পুলিশ প্রতাপ এবং কালীরঞ্জনকে ৭ দিন পুলিশ হাজতে চেয়ে আবেদন করে। বিচারক মামলার তদন্তকারী অফিসারকে জিজ্ঞাসা করেন, তিন জনের মধ্যে দু’জনকে পুলিশ হেফাজত চাওয়া হচ্ছে কেন? তদন্তকারী অফিসার জানান, পিন্টুবাবুকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এর পরে বিচারক পিন্টুবাবুকে ১৪ দিন জেল হাজত এবং অপর দু’জনকে ৬ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

কেন পিন্টুবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিল না পুলিশ?

রেল পুলিশ জানায়, ইতিমধ্যেই পিন্টুবাবুকে মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁকে আর হেফাজতে চাওয়া হয়নি। তা ছাড়া, ফের জেরার প্রয়োজন হলে করা হবে। তবে, পুলিশ পিন্টুবাবুকে নিজেদের হেফাজতে না-চাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত একদিন আগেই পিন্টুবাবুর পক্ষে মুখ খুলেছেন, তাতে তদন্ত প্রভাবিত হচ্ছে।’’ এ দিন আদাল‌তে চত্বরে পিন্টুবাবু নিজেকে ফের নির্দোষ বলে দাবি করেন।

অভিযুক্তদের হয়ে আইনজীবী নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তী, সিদ্ধেশ্বর বেজ, মোহনলাল নাড়ু এবং জয়দীপ মুখোপাধ্যায় সওয়াল করেন। পিন্টুবাবুর জামিনের আবেদন নাকচ হয়। ওই আইনজীবীদের বক্তব্য, স্নেহাশিসের দেহ মেলে ৩০ সেপ্টেম্বর। এফআইআর হয় ২ অক্টোবর। দেরিতে করা এই অভিযোগ সাজানো। তা ছাড়া, স্নেহাশিস খুন হয়েছেন, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ পুলিশ দিতে পারেনি। স্নেহাশিসের ফেসবুকে পোস্টেও আত্মহত্যার তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় বলে তাঁরা যুক্তি দেন। রাজনৈতিক কারণে পিন্টুবাবুকে ফাঁসানো হচ্ছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। সরকারি কৌঁসুলি অতনু দাস জামিনের বিরোধিতা করেন।

জয়দীপবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি-র প্ররোচনায় পিন্টুবাবু এবং তাঁর স্ত্রী মৌসুমীদেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে। রাজনৈতিক চাপে তড়িঘড়ি পিন্টুবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ জেলা বিজেপি সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘উনি যা ইচ্ছে বলতে পারেন। তৃণমূল নেতৃত্ব এবং স্নেহাশিসের বাবা-মা পিন্টুবাবুর নাম বলেছিলেন। জিআরপিতেও ওঁরা নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

নবমীর রাতে রিন্টু সাহা নামে এক বন্ধু এবং তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে রাজার মারামারি হয়। এর পরে রাজা বাড়ি চলে যান। অভিযোগ, বিষয়টি জানতে পেরে রিন্টুর আত্মীয় ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী নাগ এবং তাঁর স্বামী পিন্টুবাবু দলবল নিয়ে বাড়িতে গিয়ে রাজাকে মারধর করেন। গভীর রাতে বন্ধুরা রাজাকে এক বন্ধুর বাড়িতে শুইয়ে দিয়ে আসেন। পরে শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। দশমীর ভোরে শ্রীরামপুর মাল গুদামের কাছে ডাউন রিভার্স লাইনে তাঁর দেহ মেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE