প্রতীকী ছবি।
স্কুলে যাওয়ার আগে মায়ের কাছে ডিমভাজা দিয়ে ভাত খাওয়ার বায়না করেছিল বছর আটেকের মাফুজা খাতুন। মেয়ের বায়না মেটাতে তড়িঘড়ি ‘ইনডাকশন কুকার’-এ মা নুরাঙ্গিনা বিবি ডিমভাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণ!
বুধবার সকালে হাওড়ার পাঁচলার শুভরআড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শা পাড়ায় ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় গোটা ঘরে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান নুরাঙ্গিনা (৪৫) ও ওই ঘরে থাকা তাঁদের আত্মীয় তানজিলা বিবি (৩০)। অগ্নিদগ্ধ হয়েছে মাফুজাও। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
ঠিক কী ভাবে এই দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে ওই অগ্নিকাণ্ড।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নুরাঙ্গিনার তিন ছেলে, এক মেয়ে। তাঁর স্বামী মামুদ আলি পেশায় জরিশিল্পী। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ছেলেদের ভাত খাইয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দেন নুরাঙ্গিনা। মেয়ের বায়না শুনে মামুদ আলি ডিম কিনে এনে স্ত্রীর হাতে দিয়ে কাজে বেরিয়ে যান। তার কিছু ক্ষণের মধ্যে ওই দুর্ঘটনা। সেই সময় ওই বাড়িতে এসেছিলেন মামুদের আত্মীয় তথা পড়শি তানজিলা। পাড়া-পড়শিরা বিস্ফোরণের আওয়াজ এবং চেঁচামেচি শুনে ঘটনাস্থলে হাজির হন। তাঁরাই জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ফিরে আসেন মামুদও।
অগ্নিদগ্ধ তিন জনকে প্রথমে গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানেই নুরাঙ্গিনা এবং তানজিলা মারা যান। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, ওই এলাকার বাসিন্দা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ফারুক শা বলেন, ‘‘চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে এসে দেখি ঘর দাউদাউ করে জ্বলছে। মহিলাদের আর্তনাদ। তাপে সামনে যেতে পারছিলাম না। গ্রামবাসীদের জড়ো করে পুকুর থেকে জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি।’’ মামুদ বলেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও
দু’জনকে বাঁচাতে পারলাম না। মেয়েটাকে যেন ফিরে পাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy