Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভোট দেব না, হুমকি কর্মহীন শ্রমিকদের

কারখানা পুড়ে যাওয়ার পাঁচ বছর পরেও সেখানে পুনর্বহাল হওয়ার সম্ভাবনা না দেখে সোমবার সকাল থেকে কারখানার গেটের সামনে পরিবার নিয়ে বসে পড়েন ৭০ জন কর্মী।

প্রতিবাদ: শালিমার পেন্টসের গেটের সামনে রান্না। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিবাদ: শালিমার পেন্টসের গেটের সামনে রান্না। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২৬
Share: Save:

হুগলির কানোরিয়া জুটমিলের ধাঁচে এ বার শালিমার পেন্টসের কর্মীরা কারখানার গেটের সামনে উনুন জ্বেলে রান্না শুরু করলেন। গামছা পেতে ‘ভিক্ষা’ করলেন পথচলতি মানুষজনের কাছে। সেই সঙ্গে হুমকি দিলেন, গত পাঁচ বছর যখন কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরাই তাঁদের খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি, তখন আর তাঁদের অনুরোধ মেনে ভোট দেবেন না তাঁরা। বিক্ষোভরত কর্মী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা তো ভোট দেবেনই না, মাইকে প্রচার চালিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের কাছেও আবেদন জানাবেন ভোট বয়কট করার জন্য।

কারখানা পুড়ে যাওয়ার পাঁচ বছর পরেও সেখানে পুনর্বহাল হওয়ার সম্ভাবনা না দেখে সোমবার সকাল থেকে কারখানার গেটের সামনে পরিবার নিয়ে বসে পড়েন ৭০ জন কর্মী। দাবি তোলেন, তাঁদের হয় টাকা দেওয়া হোক অথবা চাকরি। ওই দাবিতে সে দিন সকাল থেকে গেটের সামনে মঞ্চ বেঁধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কর্মী ও তাঁদের পরিজনেরা। কারখানার মূল ফটক বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ রাতে পুলিশ দিয়ে জোর করে তাঁদের অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মহিলারা রুখে দাঁড়ালে পুলিশ চলে যায়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কর্মী-ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বলেন, ‘‘রাতে পুলিশ এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আমাদের সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মহিলারা রুখে দাঁড়ান।’’

অবস্থানরত কর্মীরা এ দিন কারখানার গেটের সামনে গামছা পেতে ‘ভিক্ষা’ করতে বসেন। এর পরে গেটের পাশে উনুন তৈরি করে সংগৃহীত টাকা দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে সেখানেই খাওয়াদাওয়া সারেন। ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে চার দিকে পোস্টারও সাঁটা হয়।

তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত কর্মী-ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খানের অভিযোগ, ‘‘গত পাঁচ বছরে কোনও নেতা আমাদের খোঁজ নেননি। তাই ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছি। আমরা তো দেবই না, এলাকাতেও প্রচার করব ভোট বয়কট করার জন্য।’’ বিক্ষোভরত কর্মীরা এ দিন আরও অভিযোগ করেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার নামে ভাঁওতা দিচ্ছেন। এর শেষ দেখে ছাড়বেন তাঁরা। আকবর খান নামে এক কর্মী বলেন, ‘‘কারখানার জেনারেল ম্যানেজার গত ৭ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ৩০ নভেম্বর ফের কারখানা খুলছে। কিন্তু সেটা যে ভাঁওতা ছিল, তা স্পষ্ট।’’

শালিমার পেন্টসের পক্ষ থেকে জেনারেল ম্যানেজার অতনু ভাণ্ডারী বলেন, ‘‘কর্মীরা ভুল বুঝছেন। তাঁরা আমাদের লোক। তাঁদের ভাঁওতা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ওঁদের কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। বকেয়া টাকা-পয়সা ধীরে ধীরে মিটিয়ে দেওয়া হবে। এত বড় সংস্থা কারও টাকা মারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election Unemployed Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE