Advertisement
০৬ মে ২০২৪

শিক্ষককে মার, রুখল পড়ুয়ারাই

সোমার বাবা প্রেমচাঁদ দোলই বলেন, “আমার মেয়ের হাত থেকে পেন পড়ে গিয়েছিল। ওই পেন তুলতে গেলে অন্য ছাত্রীরা একটু হেসেছিল। ওদের ধমক দিতে পারতেন শিক্ষক।

সরব: ভিড় জমেছে চাঙ্গুয়াল স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

সরব: ভিড় জমেছে চাঙ্গুয়াল স্কুলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

ক্লাসে সোমা দলুই নামে এক সহপাঠিনীর পেন মাটিতে পড়ে যাওয়ায় হাসছিল লক্ষ্মী দোলুই ও সুজাতা দোলই। ক্লাসে হট্টগোল দেখে তিনজনকেই অঙ্কের শিক্ষক সোমনাথ আচার্য বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। মারধরের প্রতিবাদে অভিভাবকদের একাংশ এসে স্কুলে বিক্ষোভ শুরু করেন। সোমনাথবাবুকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খড়্গপুর-২ ব্লকের চাঙ্গুয়াল কন্দর্পপুর প্রণবেশ বিদ্যায়তনের ঘটনায় একাংশ পড়ুয়া শিক্ষককে মারের প্রতিবাদ করে।

বুধবার স্কুলের নবম শ্রেণিতে অঙ্কের ক্লাস চলাকালীন ঘটনার সূত্রপাত। তিন ছাত্রীর পরিজনেদের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েদের বেধড়ক মারধর করেন সোমনাথবাবু। ঘটনার বিহিত চেয়ে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দাকে নিয়ে অভিভাবকেরা স্কুলে চড়াও হন। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন সোমনাথবাবুকে মারধর করে
চম্পট দেয়।

সোমার বাবা প্রেমচাঁদ দোলই বলেন, “আমার মেয়ের হাত থেকে পেন পড়ে গিয়েছিল। ওই পেন তুলতে গেলে অন্য ছাত্রীরা একটু হেসেছিল। ওদের ধমক দিতে পারতেন শিক্ষক। কিন্তু সোমনাথবাবু ওদের তিনজনকে মারধর করেছেন। তাই অভিযোগ জানাতে স্কুলে এসেছিলাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মধ্যে মিশে থাকা কেউ কেউ শিক্ষককে মেরেছে। আমরা এ সব বুঝিনি।”

শিক্ষককে মার খেতে দেখে রুখে দাঁড়ায় স্কুলের কয়েকজন ছাত্রী। ঘটনার খবর পেয়ে আসেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের চন্দন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “স্কুল শিক্ষক যে ভাবে তিন জন ছাত্রীকে মারধর করেছেন সেটা ঠিক নয়। তাই অভিভাবকেরা স্কুলে এসে প্রতিবাদ করেছিল। সেই সময়ে কেউ ওই শিক্ষককে মারধর করেছে। এই ঘটনা নিন্দনীয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা শিক্ষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। দু’পক্ষেরই দোষ রয়েছে। আমরা চাইছি আলোচনার মাধ্যমে পুরো বিষয়টির সমাধান হোক।”

স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকুমার চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার ছুটিতে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি বুধবার স্কুলে ছিলাম। কিন্তু সোমনাথ আচার্য কোনও ছাত্রীকে মারধর করেছে বলে শুনিনি।” গোলমাল চলাকালীন বুধবার এসেছিলেন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি শক্তিপদ সিংহ। এর পরে অভিভাবক, শিক্ষক ও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে নিয়ে আলোচনায় বসেন তিনি। শক্তিপদ সিংহ বলেন, “এক শিক্ষক ছাত্রীদের মারধর করেছেন বলে অভিযোগ তুলে অভিভাবকেরা স্কুলে এসেছিলেন। সেই সময়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী ওই শিক্ষককে মারধর করছিলেন। আলোচনায় সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। অভিভাবকেরা শিক্ষকের কাছে
ক্ষমাও চেয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Education Kharagpur খড়্গপুর
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE