প্রতীকী ছবি।
বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরির জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের আলাদা প্রকল্প রয়েছে। জেলাকে ‘নির্মল’ ঘোষণা করার জন্য সরকারি হিসেব-নিকেশের অন্ত নেই। কিন্তু তারপরেও জঙ্গলমহলের প্রান্তিক গ্রামগুলির অনেকেই প্রাতঃকৃত্য করতে মাঠে যান। মাঝে মাঝেই হাতির হানার খবর সামনে আসে। মৃত্যুও হয়। তেমনই একটি ঘটনা ঘটল রবিবার ভোরে। মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়ে মারা গেলেন এক প্রৌঢ়া। ঘটনাস্থল এ বার লালগড়ের ডাইনটিকরি গ্রাম।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ভাদু কালসার (৫৫)। স্বামীহীনা ভাদু লালগড়ের ডাইনটিকরি গ্রামে দাদার বাড়িতে কয়েক মাসের জন্য থাকতে এসেছিলেন। রবিবার ভোর চারটে নাগাদ মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে গিয়েছিলেন তিনি। বেলা বাড়লেও তিনি ফিরে আসেননি। উদ্বিগ্ন পরিজনেরা তাঁর খোঁজ করতে গিয়ে ডাইনটিকরি গ্রামের লাগোয়া মাঠে তাঁর মাথা থেঁতলানো নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। দেহের আশেপাশের নরম মাটিতে হাতির পায়ের ছাপ ছিল। বন দফতর ও পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। বন দফতরের অনুমান, মাঠে হাতির সামনে পড়ে যান ওই মহিলা। হাতির হানায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি বিটের জঙ্গলে এখন দলমার পালের ৫০টি পরিযায়ী হাতি রয়েছে। শনিবার রাতে মালাবতীর দিক থেকে আরও গোটা দশেক হাতি দু’টি দলে ভাগ হয়ে কংসাবতী পেরিয়ে লালগড়ের দিকে চলে এসেছে। এ দিন ভোরে ওই দলটি ডাইনটিকরি দিয়ে যাচ্ছিল। সেই দলের একটি হাতির সামনে পড়ে যান ভাদু। মৃতার দাদা রাজকুমার রণবাজ জানান, ভাদু নিঃসন্তান ছিলেন। তিনি মাঝে মধ্যে ডাইনটিকরিতে তাঁর বাড়িতে এসে থাকতেন।
প্রশাসনের বার বার নিষেধ সত্ত্বেও মাঠে প্রাতঃকৃত্য করা আটকানো যাচ্ছে না কেন? ডাইনটিকরি গ্রাম থেকে নির্বাচিত লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পুতুল বাগরাইয়ের দাবি, ‘‘যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে তাঁরা যাতে সেটা ব্যবহার করেন, সে ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। বাদবাকি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির জন্য সমীক্ষা করা হয়েছে।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাইনটিকরি গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে এখনও সরকারি শৌচাগার তৈরি হয়নি। যাঁদের বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে, তাঁদের অনেকেই শৌচাগার ব্যবহার করেন না।বন দফতরের বক্তব্য, হাতির দল সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় যাতায়াত করে। ওই সময়ে সেখানে যাওয়া ঝুঁকিবহুল। সচেতনতামূলক প্রচার করা হলেও বাসিন্দাদের একাংশ সচেতন হচ্ছেন না।
মেদিনীপুরের ডিএফও সন্দীপ বোরোয়াল বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারকে নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সন্ধ্যের পরে ও ভোরের দিকে হাতির যাতায়াতের রুটে এলাকাবাসী যাতে না যান সেজন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy