প্রতীকী ছবি।
জমি খাস হয়ে যাওয়ায় বিপাকে লক্ষাধিক মানুষ। এক-দু’একর নয়, মেদিনীপুর-খড়্গপুরে প্রায় ১ হাজার ৬০০ একর জমি রায়ত থেকে খাস হয়ে গিয়েছে বলে ভূমি দফতর সূত্রে খবর। এর জেরে বন্ধ মিউটেশন, জমি কেনাবেচা থেকে ঘরবাড়ি তৈরি সবই।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের ৪টি ও খড়্গপুরের ১টি মৌজায় জমির সমস্যা রয়েছে। মেদিনীপুরের মৌজাগুলো হল কর্নেলগোলা, চাঁদিয়ানাবাজার, বাড়পাথর ক্যানটনমেন্ট এবং কেরানিতলা। খড়্গপুরে সমস্যা খাসজঙ্গল মৌজায়। এই ৫টি মৌজার জমি ১৯৪৫ সালে লিজে দেওয়া হয় স্থানীয়দের। ৩০ বছরের জন্য। সেই মতো ১৯৭৫ সালে লিজের মেয়াদ ফুরিয়েছে। আর নতুন করে লিজ দেওয়া হয়নি। এরপর অবশ্য জমি কেনাবেচা চলেছে।
মিউটেশনও হয়েছে।
সমস্যার শুরু ২০১৫ সালে। ওই সময়ে এক নির্দেশিকা জারি করে এই জমি খাস বলে জানানো হয়। সমস্যায় পড়েন স্থানীয়রা। মেদিনীপুরে জমি জরিপের কাজ করেন জয়দীপ নন্দী।
জয়দীপের কথায়, ‘‘জমি খাস হয়ে যাওয়ার ফলে অনেকেই সমস্যায় পড়েন। এ এক বড় সমস্যা। খাস জমিতে যে কোনও কিছুই
করা সম্ভব নয়।’’
ওই মৌজাগুলোয় খাস হয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ঠিক কত? ভূমি দফতরের এক সূত্রে খবর, মোট ১৬১৮.৩৭ একর জমি রয়েছে। এর মধ্যে কর্নেলগোলায় ৬২.৬৮ একর, চাঁদিয়ানা বাজারে ৭৯.৩৩ একর, বাড়পাথর ক্যানটনমেন্টে ৪৬৯.৯০ একর, কেরানিতলায় ২৩৭.০৮ একর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেদিনীপুর সফরের পর অবশ্য সমস্যার সমাধানে আশার আলো দেখা দিয়েছে। আগেই এই সমস্যার দিকটি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এনেছিলেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকে সমস্যার দিকটি মমতার নজরে আনেন খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়।
এখনও এই সমস্যার সমাধান হয়নি জেনে বিরক্তই হন মুখ্যমন্ত্রী। ভূমিসচিব মনোজ পন্থের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘এখানে একটা খাস জমির ব্যাপার আছে এখানে। তোমরা আলোচনাতেই বিষয়গুলো ফেলে রেখে দাও। তারপর আর কাজগুলো হয় না। কেন এটা হবে?’’
মনোজকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এর একটা পলিসিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনাকে জানাবো।’’ মমতা বলেন, ‘‘নেক্সট ক্যাবিনেটে যেন এটা আসে। আমি চিফ সেক্রেটারিকেও বলে রাখলাম।’’ বৈঠকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘১৯৭৫ সালের পর যাদের লিজ নেই, তারা তো কিছুই করতে পারছে না। এ তো অনেক মানুষের সমস্যা।’’ বিধায়ক দীনেনবাবু বলতে শুরু করেছিলেন, ‘‘দিদি, এটা হয়ে গেলে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবে।’’ মমতা বলেন, ‘‘ভাই, আমি ব্যাপারটা জানি বলেই তো বললাম।’’
দফতর সূত্রে খবর, শীঘ্রই এ নিয়ে ‘পলিসিগত’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। লিজের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। ভূমি দফতরের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘খোদ মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। সচিবকে প্রস্তাব পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করা যায়, এ বার দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy